ভিনিউজ : অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ আজ সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ এর খসড়া অনুমোদন করেছে। এর ফলে আগের সাইবার নিরাপত্তা আইনের ৯টি ধারা বাতিল হয়েছে যাবে।
যে ৯টা ধারা বাতিল করা হয়েছে সেগুলো আওতায় বিগত সরকারের আমলে ৯৫ শতাংশ মামলা দায়ের করা হয়েছে, এই মামলাগুলো এখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে।
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, সরকার এই আইনে অনেকগুলো রক্ষাকবচ তৈরি করেছে।
তিনি জানান, নতুন অধ্যাদেশের ফলে ভুয়া মামলা, যার কোনো ভিত্তি নাই, এরকম মামলা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বতিল করে দেওয়া যাবে। বিচারক যদি দেখেন অভিযোগের ভিত্তি নেই, তাহলে প্রি-ট্রায়াল স্টেটেই মামলা বাতিল করে দিতে পারবেন। চার্জশিটের জন্য ওয়েট করতে হবে না।
“অপরাধগুলোকে আমল যোগ্য অপরাধ রেখেছি, কিছু ক্ষেত্রে আপসযোগ্য রেখেছি,” বলেন তিনি।
আইন উপদেষ্টা আরো জানান, যেসব বিধান বিলুপ্ত করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে–– মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকা সংক্রান্ত বিদ্বেষ, বিভ্রান্তি, কুৎসামূলক প্রচারণার দণ্ড সংক্রান্ত যে বিধান তা বিলুপ্ত করা হয়েছে। এই বিধানে প্রচুর হয়রানিমূলক মামলা হতো।
মানহানিকর তথ্য প্রচার-প্রকাশ ইত্যাদির জন্য প্রচুর মামলা হতো। অনেক সাংবাদিকও এর ভিকটিম হয়েছে। এটা বাতিল করা হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে–– এরকম কোনো বা কথাবার্তা বলা, এ বিষয়ে প্রচুর মামলা হতো। এটা বিলুপ্ত করো হয়েছে।
আক্রমণাত্মক, মিথ্যা বা ভীতি প্রদর্শনমূলক তথ্য প্রকাশ এ সংক্রান্ত বিধান সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “নতুন সংশোধিত আইনের যেদিন গেজেট প্রকাশিত হবে তার আগের দিন পর্যন্ত এসব ধারায় দায়ের করা সব মামলা বাতিল হয়ে যাবে।”
“আরো কিছু ধারার মামলা বাতিল হয়ে যাবে, যেমন–– সাইবার সন্ত্রাসী কার্য ও সংগঠনের অপরাধ ও দণ্ড, পরিচয়ের প্রতারণা ও ছদ্মবেশ ধারনের অপরাধ ও দণ্ড। ধারাটা আছে, তবে সংজ্ঞাটা এমনভাবে পরিবর্তিত হয়েছে যাতে আগের ধারার মামলা আর টিকে থাকবে না।”
নতুন আইনে জামিনযোগ্য অপরাধ হবে–– সাইবার স্পেসে জালিয়াতির অপরাধ, ই-ট্রানজেশনে অপরাধ, ধর্মীয় বা জাতিগত বিষয়ে সহিংসতা, ঘৃণা-বিদ্বেষমূলক তথ্য প্রকাশ, যৌন হয়রানি, ব্ল্যাকমেইলিং, অশ্লীল বিষয়বস্তু প্রকাশ।
অর্থাৎ, স্পিচ অফেন্স বা কথা বলে বা মতামত প্রকাশ করে যে অপরাধ তার সব জামিনযোগ্য করা হয়েছে।
আসিফ নজরুল বলেন, “সাইবার সিকিউরিটি কাউন্সিল আছে, তারা যখন আক্রমণাত্মক বা অপরাধমূলক কোনো কন্টেন্ট অপাসারণ করবে, সেটার জন্য যে অথরিটি স্ট্যাবলিশ করা হয়েছে সেই অথরিটিতে সিভিল সোসাইটি মেম্বার থাকবে। এই অথরিটি কোনো কনেটেন্ট অপসারণ করার পরপরই ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আদালতের অনুমিতি নিতে হবে। আদালত যদি বলে এটা অপসারণ করা যা না তাহলে এটা আবার প্রকাশ করতে হবে।”
যে কনটেন্ট অপসারণ করা হয়ে সেব্যাপারে জনগণকে জানাতে হবে, জনগণ সেনসেটাইজ (সচেতন) থাকবে আসলে সরকার উদ্দেশ্যমূলকভাবে কনটেন্ট অপসারণ করছে নাকি আইনগতভাবে যেটা প্রকাশ করা যায় না সেটাই অপসারণ করেছে, বলেন আসিফ নজরুল।