ইউএনওর অফিসে জামায়াত নেতাদের পেটালেন বিএনপি নেতাকর্মীরা

পাবনা প্রতিনিধি

পাবনার সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে জামায়াত নেতাকর্মীদের দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর করেছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। সোমবার (৩ মার্চ) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মীর রাশেদুজ্জামানের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী ৪ জামায়াত নেতার দাবি, বালু উত্তোলন বন্ধে ইউএনওকে মারতে গেলে তাতে বাধা দেন তারা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাদেরকেই মারধর করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।

তবে ইউএনও বলছেন, বালু উত্তোলন বন্ধে হামলাকারীদের অসন্তোষ থাকলেও ঠিক তাকেই মারতে এসেছিলেন কি না বিষয়টি নিশ্চিত নন তিনি।

মারধরের শিকার ৪ জামায়াত নেতা হলেন, উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ফারুক-ই আজম, সেক্রেটারি টুটুল বিশ্বাস, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি ওয়ালিউল্লাহ বিশ্বাস ও সাবেক কাউন্সিলর মোস্তাক আহমেদ।ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে কোনো একটি কাজে জামায়াতের এই চার নেতা ইউএনও অফিসে যান। কিন্তু ইউএনও ব্যস্ত থাকায় তারা অফিসে বসে অপেক্ষা করতে থাকেন। এসময় উপজেলা বিএনপির সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মজিবর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন বিএনপি নেতাকর্মী ইউএনওর কাছে যান। বালু উত্তোলন কেন বন্ধ করা হয়েছে তা ইউএনওর কাছে জানতে চান তারা। সেখানে আগে থেকেই বসে থাকা জামায়াত নেতাদের দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা বলেন, ‘এরা কেন এখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকে?’ এ কথা বলেই বিএনপি নেতারা ইউএনওর কক্ষ থেকে বের হয়ে আরও কয়েকজনকে ডেকে আনেন। এরপরই বিএনপি নেতা মজিবুর রহমান, বাবু খা, মানিক খা, আব্দুল বাছেদ, আরিফ শেখসহ ৩০-৪০ জন ইউএনওর কক্ষে ঢুকে ওই জামায়াত নেতাদের কিল-ঘুষি ও লাথিসহ বেধড়ক মারধর শুরু করেন। উত্তপ্ত অবস্থায় হামলাকারীরা ইউএনওর দিকেও তেড়ে আসেন। এতে জামায়াত নেতারা গুরুতর আহত হন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

এদিকে জামায়াত নেতাদের পেটানোর ঘটনায় উপজেলা জুড়ে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। ঘটনার পর জামায়াতের উপজেলা আমির কে এম হেসাব উদ্দিন কয়েকশ নেতা-কর্মী নিয়ে ইউএনওর কার্যালয়ে ছুটে যান এবং ঘটনার প্রতিবাদ জানান। এসময় ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়। বিষয়টি নিয়ে ইউএনওর সঙ্গে বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত দেনদরবার চলে। পরে এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

এ ব্যাপারে সুজানগর উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক কে এম হেসাব উদ্দিন বলেন, সুজানগরে বালু উত্তোলন বন্ধ করায় বিএনপির এসব ক্যাডাররা ইউএনওকে মারধর ও তুলে আনার জন্য গিয়েছিলেন। এসময় জামায়াত নেতারা বাধা দিলে তাদের ৪ জনকে বেধড়ক মারধর করেন। ইউএনওকেও কয়েক দফা মারধর করতে গেলে ঠেকিয়ে দেওয়া হয়।

 

পূর্বের খবরঅর্থপাচার মামলায় তারেক রহমান ও মামুনের আপিলের রায় ৬ মার্চ
পরবর্তি খবরকক্সবাজার থেকে পায়ে হেঁটে এভারেস্টের পথে শাকিল