পরিস্থিতির কারণে আমরা বিয়ে করতে বাধ্য হই: পপি

 

ভিানিউজ : সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমে বিয়ে, মা হওয়া, নিজের ক্যারিয়ারসহ জীবনের নানা উত্থান-পতন নিয়ে কথা বলেছেন চিত্র নায়িকা পপি। দীর্ঘ ওই সাক্ষাৎকারের একপর্যায়ে অভিনেত্রী জানান, বিয়ে নিয়ে তার কোনো পরিকল্পনা ছিল না। তার ভাষ্য, ২০১৯ সালে বাসায় একটা ‘ভয়াবহ দুর্ঘটনা’ ঘটে। সেদিন অনেক বড় অঙ্কের টাকা চুরি হয়। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে থানায় জিডি করেন। পরে তাকে রমনা থানায় ডাকা হয়।

সেদিনের বর্ণনা দিতে গিয়ে পপি বলেন, ‘সেদিন আদনানকেও ডাকি। থানায় গিয়ে দেখলাম, আমার ভাই-বোনেরা। ঘটনাচক্রে জীবন নিয়ে আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। মনে হলো, আমি কারো কাছে নিরাপদ নই। ফিল্মের কাজে সবার সঙ্গে মিশেছি ঠিকই, কিন্তু আপনজন কেউই ছিল না। বরাবরই আমি পরিবার অন্তঃপ্রাণ মানুষ। অথচ সেই আমার কাছেই পরিবারের সবাই অচেনা হয়ে গেল। সম্পত্তি ও টাকাপয়সা নিয়ে জটিলতা শুরু হয়। জটিলতার এই পুরো সময়ে আদনান আমাকে ছায়ার মতো আগলে রেখেছে। কোনো জটিলতাই আমাকে স্পর্শ করতে দেয়নি। আমার হাতটা শক্ত করে ধরে বলেছিল, ‘আমি আছি, নো টেনশন।’

অভিনেত্রী বলেন, ওই সময়ে এমন একজন বন্ধুকে যদি না পেতাম, আমার জীবনটাই বিপন্ন হয়ে যেত। ২০২০ সালের দিকে আবার জটিলতা শুরু হয়। তখনো ভাবলাম, আমাকে মা-বোনেরা বাঁচতে দেবে না। বাসা থেকে বের হয়ে পড়ি। যোগাযোগ করি আদনানের সঙ্গে। এরপর আমার জায়গাজমির দলিল, ব্যাংকের কাগজপত্র ও প্রয়োজনীয় সব ডকুমেন্ট পুলিশের সহযোগিতায় উদ্ধার করি। বলতে পারেন, রীতিমতো জীবন বাঁচাতে বাসা থেকে পালিয়ে গেলাম। তখন আমার সামনে দুটি পথ খোলা ছিল; হয় আত্মহত্যা করতে হতো, নয়তো ওদের হাতে খুন হয়ে যেতে…।

পপি বলেন, আদনানই তখন আমাকে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছে। পরিস্থিতির কারণে আমরা বিয়ে করতে বাধ্য হই। ২০২০ সালের নভেম্বরে বিয়ে করি বাসায় কাজি ডেকে। আমার আত্মীয়স্বজন ছিলেন। এটা সত্য, বিয়েতে আমার মাকে ডাকিনি। হয়তো এটা বিশ্বাস করবে না কেউ, কিন্তু এটাই সত্য। আমার মা চাইতো না আমি বিয়ে করে সংসারী হই।’

কথা প্রসঙ্গে পপি জানান, তিনি তার মতো সংসার শুরু করেন। স্বামীর সঙ্গে ধানমন্ডিতে থাকতেন। তার ভাষ্য, ‘আমার সংসার বাঁচানোর জন্য আমি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এরপর আমার স্বামী যেভাবে চেয়েছে, সেভাবেই জীবনটাকে গুছিয়ে নিয়েছি। আমি কিন্তু অনেকবার বলেছিও, বিয়ের পর আমি সিনেমা ছেড়ে দেব। আমার স্বামী না চাইলেও সিনেমায় কাজ করব না।’

প্রথম পরিচয় কবে? জানতে চাইলে পপি বলেন, ‘আমাদের পরিচয় সাত বছরের। পরিচয়ের তিন বছর পর আমাদের বিয়ে হয়। তবে বিয়ে নিয়ে আমাদের কোনো পরিকল্পনাও ছিল না। আদনানের সঙ্গে আমার মা-বাবাসহ পরিবারের সবার সঙ্গে চমৎকার সম্পর্ক ছিল। দুই পরিবারে যাওয়া-আসা ছিল। আমরা সবাই মিলে ঘুরতেও গেছি। পারিবারিক বন্ধু, আমার অসাধারণ একজন শুভাকাঙ্ক্ষী। আমার যেকোনো বিপদে সে ছায়ার মতো পাশে ছিল।

এর আগে মারধর ও হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে গত ৩ ফেব্রুয়ারি খুলনার সোনাডাঙ্গা থানায় পপির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তার বোন ফিরোজা বেগম।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পৈতৃক জমি নিজ দখলে নিতে স্বামী ও তার সহযোগীসহ সোমবার বেলা সাড়ে ১২টায় সোনাডাঙ্গার শিববাড়িতে জড়ো হন তারা। বাধা দিলে একপর্যায়ে ফিরোজা পারভীনসহ সবাইকে হুমকি দেন পপি ও তার স্বামী।

ফিরোজা বেগমের দাবি, পপি তাকে মারধর করেছেন এবং পপির স্বামী তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। এ অভিযোগের প্রমাণ হিসেবে সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশকে দেওয়া হয়েছে। তবে চিত্রনায়িকা পপি অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন।

পারিবারিক বিরোধের কারণে পপির বিরুদ্ধে করা সেই অভিযোগের তদন্তের অনুমতি চেয়ে সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশ আদালতে আবেদন করেছে। সম্প্রতি খুলনার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই আবেদন করেন সোনাডাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক খালিদ উদ্দিন।

ঢালিউড পপি চিত্রনায়িকা অভিনেত্রী

পূর্বের খবরআইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি : স্বাগতিক পাকিস্তানকে হারিয়ে শুভ সূচনা নিউজিল্যান্ডের
পরবর্তি খবরRosenberg: How Putin and Trump shook up the world in a week