নির্ধারিত দামে মেলে না ডলার, ঋণপত্র খোলায় বৈষম্যের শিকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা

ব্যাংক-ব্যবসায়ী সম্পর্কের ফলে বড় বড় ব্যবসায়ীরা ঋণপত্র (এলসি) খোলার সুযোগ পেলেও বৈষম্যর শিকার ছোট ব্যবসায়ীরা। ফলে তাদের এলসি খোলা কমেছে অর্ধেকের বেশি। এই অবস্থায় বিলাসী পণ্য আমদানি সাময়িক বন্ধ রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে অগ্রাধিকার দেওয়ার পরামর্শ ব্যবসায়ীদের।

জানা যায়, বর্তমানে নির্ধারিত দামের চেয়ে ১২ থেকে ১৩ টাকা বেশি দিয়ে ডলার কিনতে হচ্ছে। এরপরও ডলার দ্রুত পাওয়া নির্ভর করছে ব্যবসায়ী ও ব্যাংকগুলোর প্রভাব ও কৌশলের ওপর। পেলে প্রকাশ্যে দিতে হচ্ছে এক দাম, আর অন্যভাবে দিতে হচ্ছে বাড়তি দাম।   আমদানিকারকরা বলছেন, আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে চলতি মাসে বেশি দামে এলসি (ঋণপত্র) খুলতে হচ্ছে। আর নির্ধারিত দামে ডলার পাওয়া যাচ্ছে না।তাই বাধ্য হয়ে বেশি দামে ডলার কিনতে হচ্ছে। বাড়তি সেই দাম পরিশোধ করা হচ্ছে ভিন্ন উপায়ে।

দেশের বেশির ভাগ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে এ অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। অবশ্য প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা ব্যাংক থেকে কিছুটা কম দামে ডলার কিনতে পারলেও সাধারণ ব্যবসায়ীরা পান নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দরে। একইভাবে ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে বড় ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা ব্যাংকের কাছ থেকে সুবিধা পান, তবে সাধারণ ব্যবসায়ীদের অনেককেই ডলার সংকটের কারণে ঋণপত্র খুলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

এই প্রসঙ্গে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বনিক সমিতির ফেডারেশন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আমল গণমাধ্যমকে বলেন, অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ী ব্যাংকগুলোতে ঋণপত্র খোলা নিয়ে বৈষম্য শিকার হচ্ছেন। ডলারের সংকটে  সুযোগে ব্যবসায়ী সম্পর্কের ওপর ভিত্তিতে ঋণপত্র খোলা অগ্রধিকার পাচ্ছে। তবে ক্ষুদ্র-মাঝারি ব্যাবসায়ীদের বঞ্চিত না করে অগ্রধিকার ভিত্তিতে তাদেরএলসি খোলার সুযোগ দেওয়া আহ্বান জানিয়েছি ব্যাংকগুলোকে। এ ছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য এবং শিল্পেও কাঁচামাল ছাড়া অন্য সকল বিলাসী পণ্য আমদানি আগামী ৬ মাসের জন্য এলসি বন্ধ রাখতে পারে বাংলাদেশ ব্যাংক।

ডলারের সংকট এখনো রয়েছে, তা স্বীকার করলেও বিস্তারিত বলতে রাজি হননি মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান। অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত বলেন, খবর আসছে অনেক ব্যাংক কম দামে ডলার কিনে বেশি দামে বিক্রি করছে। এটি সবাই পারবে না। যারা পারছে না, তারা ডলার সেভাবে পাচ্ছে না। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক হিসাবে আমরা সে অনিয়ম করতে পারছি না।

পেঁয়াজ ও রসুন আমদানিকারক পরেশ পোদ্দার গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের আমদানি প্রায় ৫ ভাগের এক ভাগে নেমে এসেছে। টাকার অভাবে এলসি খোলতে পারছি না। আগে মাত্র ২০-২৫ শতাংশ মার্জিন দিয়ে এলসি খোললেও বর্তমানে ১২০ শতাংশ দিতে হয়। ডলারের সংকট এবং দর বেশি হওয়া এলসি করতে ব্যাংকগুলো নিরুসাহিত করে। তবে বড় বড় ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে ব্যাতিক্রম। তাদের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো এগিয়ে আসে।

পূর্বের খবর৯০ টাকা কেজিতে মিলছে পিঁয়াজ
পরবর্তি খবরবাণিজ্য মেলা শুরু হতে পারে ১৫ জানুয়ারি