‘মডার্ণ পিথিয়ান গেমসের’ বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের যাত্রা শুরু

বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করলো ‘মডার্ণ পিথিয়ান গেমস’। শনিবার বিকেলে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির বাংলাদেশ কার্যক্রমের সূচনা হয়।

এ সময় ‘মডার্ণ পিথিয়ান গেমস’ টি-শার্টের মোড়কও উন্মোচন করা হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, অলাভজনক, অরাজনৈতিক, অ-ধর্মীয় এবং অসাম্প্রদায়িক সংগঠন হিসেবে এটি কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন মডার্ণ পিথিয়ান গেমসের প্রতিষ্ঠাতা বিজেন্দর গোয়েল। উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল পিথিয়ান কাউন্সিলের পরিচালক ললিতা গোয়েল এবং পিথিয়ান গেমসের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট সেলিনা আক্তার শম্পাসহ অনেকে।

শুরুতেই পিথিয়ান গেমসের ধারণা তুলে ধরেন পিথিয়ান গেমস বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের মিডিয়া, কমিউনিকেশন অ্যান্ড আউটরিচ অ্যাফেয়ার ডিরেক্টর আনোয়ার হক।

তিনি জানান, দেশীয় শিল্প, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চর্চার প্লাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে ‘মডার্ণ পিথিয়ান গেমস’।”

প্রাচীন গ্রীসে দেবতা অ্যাপোলোর প্রশংসা করার জন্য অ্যাথলেটিক্স, থিয়েটার, সঙ্গীত, কবিতা এবং চিত্রকলা বিষয়ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রমাণ রয়েছে।

পিথিয়ান গেমসের সূচনা হয়েছিল প্যানহেলনিক গেমস থেকে। প্যানহেলনিক গেমস হলো প্রাচীন গ্রিসে অনুষ্ঠিত চারটি পৃথক ক্রীড়া উৎসবের সম্মিলিত শব্দ। যার মধ্যে রয়েছে- ‘পিথিয়ান গেমস’, ‘অলিম্পিক গেমস’, ‘নেমিয়ান গেমস’ ও ‘ইস্টমিয়ান গেমস’।

কালের বিবর্তনে পিথিয়ান গেমস হারিয়ে যায়। ভারতীয় নাগরিক বিজেন্দর গোয়েল ২০২২ সালের ৭ এপ্রিল গ্রিসের ডেলফিতে অনুষ্ঠিত ডেলফি ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সাধারণ সভায় আধুনিক পিথিয়ান গেমসের ধারণা তুলে ধরেন এবং সেখানে বিজেন্দর গোয়েলকে আধুনিক পিথিয়ান গেমসের ‘প্রতিষ্ঠাতা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

বিজেন্দর গোয়েল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “এটা আমার জন্য ভীষণ সম্মানের। কারণ এই বাংলার মাটিতে আমি কথা বলছি। বাংলার কিংবদন্তি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলামকে আমি স্মরণ করছি।”

কোভিডের সময় মডার্ণ পিথিয়ান গেমসের ভাবনাটি আসে জানিয়ে বিজেন্দর গোয়েল বলেন, “কোভিডের আঘাত আমাদের অনেক কিছুই নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে। আগামির বিশ্বে আমাদের আরও অনেক চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড়াতে হবে।”

পিথিয়ান গেমসের সঙ্গে অলিম্পিক গেমসের পার্থক্য তুলে ধরে বিজেন্দর গোয়েল বলেন, “অলিম্পিক গেমস কেবলমাত্র খেলাধুলার অংশ। কিন্তু আধুনিক পিথিয়ান গেমসের সঙ্গে আছে- চিত্রকলা, সঙ্গীত, লোকজ খেলাধুলা।”

পিথিয়ান মুভমেন্টে বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশ নেতৃত্ব দেবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

আটটি সৃজনশীল এরিয়া নিয়ে আধুনিক পিথিয়ান গেমসের কার্যক্রম চলবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এরিয়াগুলো হলো- সংগীত, পারফরমিং আর্টস ও ভিজ্যুয়াল আর্টস, সামাজিক ও ঐতিহ্যবাহী শিল্পকলা, ভাষা ও সাহিত্য, স্থাপত্য ও পরিবেশবিদ্যা, রোবোটিকস ও ডিজিটাল আর্টস, মার্শাল আর্টস এবং ঐতিহ্যবাহী গেমস।

এতদিন বাংলা উচ্চারণে ‘মডার্ণ পাইথিয়ান গেমস’ শব্দবন্ধটি সর্বত্র ব্যবহার হলেও এখন থেকে এটিকে ‘আধুনিক পিথিয়ান গেমস’ বলা হবে বলেও জানানো হয়।

পিথিয়ান গেমসের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সভাপতি সেলিনা আক্তার শম্পা বলেন, সবাইকে ধন্যবাদ জানাই এই আয়োজনে যুক্ত হওয়ার জন্য।

বাংলাদেশে পিথিয়ান গেমসের আগামি দিনের পরিকল্পনার বিষয়ে মিডিয়া ডিরেক্টর আনোয়ার হক বলেন, “সংগঠনকে সুংগঠিত করাটাই আমাদের এখন লক্ষ্য। আমরা প্রতিযোগিতা, রিসার্চ এবং কমিউনিকেশন নিয়ে কাজ করবো। বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী  খেলার পাশাপশি শিল্প-সংস্কৃতি নিয়ে ধারাবাহিকভাবে কাজ করবো, অচিরেই সবাই দেখতে পাবেন।”

এস/ভি নিউজ

পূর্বের খবরমুক্ত গণমাধ্যম সূচকে বাংলাদেশের অবনতি হওয়ার কারণ কী?
পরবর্তি খবরঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেন পাবনার সন্তান মোঃ দুলাল হোসেন সরদার