টাঙ্গাইল সদর ও কালিহাতী আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র কিনলেন মুরাদ সিদ্দিকী

Share

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান টাঙ্গাইলের সাবেক ছাত্রনেতা মুরাদ সিদ্দিকী। এ উপলক্ষে তিনি টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) এবং টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

রোববার (১৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ঢাকার কেন্দ্রীয় অফিসের নির্বাচনী সেল থেকে এ দুটি আসনের মনোনয়নপত্র ক্রয় করে তার প্রতিনিধি দল। তবে মনোনয়ন পত্র ক্রয়ের বিষয়ে জেলার নেতারা অবগত নন।

টাঙ্গাইলের প্রভাবশালী সিদ্দিকী পরিবারের সদস্য মুরাদ সিদ্দিকী কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম এবং সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর ছোট ভাই। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হবে। এ অবস্থায় মুরাদ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) এবং টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র কিনেছেন- এমন খবরে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা চলছে। তাহলে তিনি কি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন?  নাকি দলের কোন পদে ঠাঁই হচ্ছে তার? এসব বিষয়ে রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, বিগত ১৯৯৯ সালে কাদের সিদ্দিকী আওয়ামী লীগ ছেড়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন। মুরাদ সিদ্দিকী তখন তার ভাই কাদের সিদ্দিকীর সাথে দলে যোগ দেন। বিগত ২০০১ ও ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী হিসেবে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসন থেকে প্রতিদ্বন্দিতা করেন তিনি। এরপর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের রাজনীতি থেকে সরে আসেন। বিগত ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করে উল্লেখযোগ্য ভোট পেয়ে পরাজিত হন।

মূলত ২০০৯ সাল থেকে মুরাদ সিদ্দিকী আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের জেলার কিছু নেতার বাধার কারনে সেটা সম্ভব হয় নি। অথচ ২০১৫ সালে মুরাদ সিদ্দিকীর অনুসারী টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র জামিলুর রহমান মিরনসহ অনেকেই আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তাঁরা পরবর্তী সময় জেলা আওয়ামী লীগে পদ-পদবিও পান। কিন্তু মুরাদ সিদ্দিকী যোগ দিতে ব্যর্থ হন। দলে ঢুকতে না পারলেও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ এবং দলীয় কার্যালয়ে মুরাদ সিদ্দিকী নিয়মিত যাতায়াত করেন। বিগত ২০২২ সালের ৭ নভেম্বর টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রায় দশ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে অংশগ্রহণ করেন।

টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সদর আসনের এমপি ছানোয়ার হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, তার মনোনয়ন পত্র ক্রয়ের বিষয়ে আমি ভালভাবে অবগত নই। তবে শুনেছি তিনি ফরম সংগ্রহ করেছেন। পদ পদবি ছাড়া মুরাদ সিদ্দিকী কিভাবে মনোনয়ন পত্র ক্রয় করলেন এ প্রশ্নে ছানোয়ার হোসেন বলেন এটা দলের নীতি নির্ধারকরা বলতে পারবেন। জমাদানের সময় পদপদবিসহ বিভিন্ন তথ্য উল্লেখ করতে হয়।

মুরাদ সিদ্দিকী কালের কন্ঠকে বলেন, আমার রক্তে আওয়ামী লীগ, আমি আওয়ামী পরিবারের সন্তান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আদর্শে জননেত্রী শেখ হাসিনার একজন ক্ষুদ্র কর্মী আমি। রাজনীতি করি মানুষের কল্যাণে। এবার দুটি আসনে দলের কাছে মনোনয়ন চেয়েছি। সদর আসনে রয়েছে আমার নিজস্ব ভোট ব্যাংক ও কালিহাতী আমার পৈত্রিক নিবাস। সাধারণ মানুষ আমাকে ভালোবেসে এমপি হিসেবে দেখতে চায়। দল আমাকে যে কোন আসন থেকে নৌকা দিলে দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে আসনটি উপহার দিবো। দল আমাকে যে দায়িত্ব দিবে সেটা নিষ্ঠার সাথে শতভাগ পালন করবো।

এস/ভি নিউজ