বিএনপিসহ কয়েকটি দলের ডাকা হরতাল-অবরোধ কর্মসূচির কারণে খুলনায় পর্যটন ব্যবসায় ধস নেমেছে। একের পর এক বাতিল হচ্ছে পর্যটকদের ভ্রমণের বুকিং। অন্যদিকে নতুন করে পর্যটক না পাওয়ায় মূল মৌসুমেই অনেকটা অলস সময় কাটাচ্ছেন ট্যুর অপারেটর বা পর্যটন ব্যবসায় যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তা–কর্মচারীরা।
ট্যুর অপারেটররা বলছেন, ২০১৫ সালের পর আবার এমন সংকটে পড়েছেন তাঁরা। করোনার সময়ও এতটা খারাপ পরিস্থিতি ছিল না। একের পর শিডিউল বাতিল হওয়ায় প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে তাঁদের।
খুলনায় পর্যটন শুধু সুন্দরবনকেন্দ্রিক। সুন্দরবনে পর্যটনের মূল মৌসুম শুরু হয় অক্টোবরে, চলে মার্চ পর্যন্ত। এই ছয় মাসের পর্যটন ব্যবসার জন্য ট্যুর অপারেটররা বসে থাকেন বাকি ছয় মাস। কিন্তু এবার অক্টোবরের শেষ সময় থেকে টানা হরতাল ও অবরোধের ঘোষণা দিচ্ছে বিএনপিসহ কয়েকটি দল। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণত মানুষ ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছেন না। ফলে ট্যুর অপারেটররা ভ্রমণ করতে নিয়ে যাওয়ার জন্য পর্যটক পাচ্ছেন না।
আগে ছুটির দিনে পর্যটক হতো এক থেকে দেড় হাজার, বর্তমানে সেখানে পর্যটক হচ্ছে ৩০০ থেকে ৫০০ জন। অন্যদিকে ছুটির দিন বাদে ২০০-৩০০ পর্যটক আসতেন, এখন ৫০ জনও আসছেন না।
মেসার্স সুন্দরবন ট্যুরিজম প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. এনামুল হক বলেন, অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত পরপর ছয়টি ভ্রমণের শিডিউল ছিল। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে তা বাতিল করেছেন পর্যটকেরা। অগ্রিম টাকা দিয়ে বুকিং করেও এখন টাকা ফিরিয়ে নিচ্ছেন। অন্যদিকে নতুন করে পর্যটক আসছেন না।
২০২২ সালের জুন মাসে পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। এই কারণে গত এক বছরে সুন্দরবন ভ্রমণে দেশি পর্যটক বেড়ে যায় প্রায় ৪৫ শতাংশ। আর বিদেশি পর্যটক বেড়ে দ্বিগুণ হয়। পর্যটকবাহী বিলাসবহুল জাহাজের সংখ্যাও বেড়েছে। এ খাতে নতুন নতুন বিনিয়োগ আসছে।
সুন্দরবনে এক দিনে ভ্রমণের জনপ্রিয় স্থান হিসেবে পরিচিত করমজল বন্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্র। প্রতিবছর সেখানে এক লাখের বেশি পর্যটক ভ্রমণ করেন। তবে এবার সেখানে পর্যটকদের খরা চলছে। ওই কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির প্রথম আলোকে বলেন, আগে ছুটির দিনে পর্যটক হতো এক থেকে দেড় হাজার, বর্তমানে সেখানে পর্যটক হচ্ছে ৩০০ থেকে ৫০০ জন। অন্যদিকে ছুটির দিন বাদে ২০০-৩০০ পর্যটক আসতেন, এখন ৫০ জনও আসছেন না।
জানতে চাইলে ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবনের সাধারণ সম্পাদক এম নাজমুল আজম বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর যেভাবে পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছিল, ঠিক তেমনিভাবেই রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে তা কমে গেছে।
এস/ভি নিউজ