বেইলী রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শোক প্রকাশ করছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ

আগুন জ্বলছে বেইলি রোডের বহুতল ভবনে। গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে

২৯ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে বেইলী রোডের গ্রীন কোজি কটেজ নামের ভবনে আগুন লাগার কারণে ৪৬ জন মানুষের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। অনেকেই আগুনে পুড়ে আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হৃদয়বিদারক অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি জানাচ্ছি গভীর সমবেদনা। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা তাৎক্ষণিকভাবে আগুনে পুড়ে যাওয়া আহত সকলের চিকিৎসার ব্যয়ভারের দায়িত্ব নেয়ার ঘোষণা দেয়ায় দেশবাসীর পক্ষ থেকে মানবিক প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পাশাপাশি ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বেইলী রোডের মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের আহতদেরকে রক্ত দিয়ে পাশে থাকার চেষ্টা করেছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট দাবি অবিলম্বে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাগুলো স্থায়ীভাবে বন্ধ করার জন্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। প্রয়োজনে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে অতীতের ঘটনাগুলো তদন্তপূর্বক দায়িত্বপ্রাপ্তদেরকে সবসময় জবাবদিহিতা, তদারকি ও নজরদারির আওতায় রাখতে হবে। কারণ কেউ কারো দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেন না। ঘুষ, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির কারণে নজরদারি ও তদারকি থেমে যায়। নোটিশ পর্যন্তই সবকিছু থেমে থাকে। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় প্রতিটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠিত হয় কিন্তু সেই তদন্ত কমিটির সুপারিশগুলো আর আলোর মুখ দেখে না। দীর্ঘদিন পর আলোর মুখ দেখলেও বাস্তবায়ন হয়না। নিমতলীর অগ্নিকাণ্ডসহ অতীতের ঘটনাগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করলে আজকে এধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতো না। বেইলী রোডের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা সংঘটিত হওয়ার মূল কারণগুলো দ্রুত চিহ্নিত করে প্রকৃত দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। শুধুমাত্র দোকান মালিকদের গ্রেফতার করলেই ন্যায়বিচার হবে না। সংশ্লিষ্ট এলাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদেরকেও শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ভবনটিতে ফায়ার এক্সিট, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, যথাযথ বিল্ডিং কোড অনুসরণ করা হয়েছে কিনা সবকিছু নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করতে হবে। দ্রুত সেই তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে প্রকৃত অপরাধীদেরকে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা সঠিকভাবে নজরদারি ও নিয়মিত তদারকি করেছেন কিনা সেটা আগে খতিয়ে দেখতে হবে। ঝুকিপূর্ণ ভবন হিসেবে বারবার নোটিশ দেয়ার পরেও কিভাবে তারা সেখানে ব্যবসা করতে পারলো। ফায়ার এক্সিট ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকলে ঝুকিপূর্ণ সেই ভবনকে অনেক আগেই সিলগালা করে দেয়া উচিত ছিল। সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাও এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দায়ভার এড়াতে পারেন না। অবিলম্বে ভবনের মালিকসহ দায়িত্ব পালনে অবহেলা ও গাফিলতির অপরাধে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। রাজধানীসহ দেশের সকল বিভাগ-জেলা শহরে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো চিহ্নিত করে সিলগালা করে দিতে হবে। ভবনগুলোতে তদারকি ও নজরদারি বাড়াতে হবে। বিল্ডিং কোড অনুসরণ, ফায়ার এক্সিট ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিশ্চিত না করে কোন নতুন ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেয়া যাবে না। প্রতিটি মানুষের জীবনের নিশ্চয়তা দেয়া রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারকে আরোও কঠোর ভূমিকা পালন করার দাবি জানাচ্ছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।

এস/ভি নিউজ

পূর্বের খবরদায়িত্ব পালন না করে সরকারের সমালোচনা বিএনপির অভ্যাস : নানক
পরবর্তি খবরপরীমণির রহস্যময় বার্তা