আগাম দুর্গাপুজো সারলেন নন্দিতা-শিবু! নাফিসার উদ্যোগে তৈরি দুর্গামূর্তি

Share

খাওয়াদাওয়া, অবসরে আড্ডা আর মন দিয়ে শুটিং— উইন্ডোজ প্রযোজনা সংস্থার শুটিংয়ের চেনা ছবি। ‘রক্তবীজ’-এ সেই আয়োজন আরও বড়। উপলক্ষ, দুর্গাপুজোর শুটিং। টিম ‘রক্তবীজ’ আজকাল ডট ইনকে জানিয়েছে, নিয়ম মেনে, নিষ্ঠা ভরে চার-পাঁচ দিন ধরে সবাই সেটেই পুজো সেরেছেন। এবং কাকতালীয় ভাবে অকাল-পুজো আর বাসন্তী পুজোর তারিখ এক! চমকের আরও বাকি। একাধিক দুর্গা প্রতিমার সেরা নির্যাসটুকু ছেঁচে তৈরি ছবির প্রতিমা। সেই মূর্তি তৈরির নির্দেশনায় প্রযোজনা সংস্থার শিল্প নির্দেশক নাসিফা খাতুন। এই ছবি দিয়ে নন্দিতা-শিবু আরও একবার সর্বধর্মসমন্বয়ের বার্তা দিলেন সমাজে।

যে কোনও ছবি তৈরির পিছনে অনেক গল্প থাকে। নন্দিতা-শিবুর ছবি তৈরির কাহিনিসংখ্যা অজস্র। শুট শুরুর কথা এক সময়ে। পিছোতে পিছোতে অবশেষে তারিখ যখন ঠিক পরিচালক চমকে উঠলেন। ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বাসন্তীপুজোর দুটো তিন আর তাঁদের শুটিংয়ের তারিখ এক! এমনিতেই কোনও কাজে ফাঁক রাখেন না এই জুটি। কাকতালীয় ভাবে তারিখ মিলতেই ঘোষণা, যে ভাবে সত্যিকারের পুজো হয় ঠিক সেভাবেই সেটের পুজো হবে। যেমন নির্দেশ তেমনই কাজ। পরিচালক অরিত্র মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে নিখুঁত ভাবে আয়োজনের শুরু। ছবির দেবী প্রতিমা তৈরি করেছেন কালীঘাটের এক মৃৎ শিল্পী। পাঁচলার দাসবাড়িতে পুজোর শুট হয়েছে। সেখানে মূর্তি পৌঁছনো মাত্র সেটে উৎসবের আবহ। দেবীর যে হাতে যে অস্ত্র থাকে সেই হাতে সেই অস্ত্র সাজানো হয়েছিল।

বিশাল দুর্গাদালান এবং মণ্ডপ। ওই পাঁচ দিন কেউ জুতো পায়ে হাঁটেননি সেখানে। অথচ পুরো জায়গাজুড়ে উচ্চ মাত্রার বৈদ্যুতিক সংযোগ থাকত। যে কোনও সময়ে বড় ধরনের বিপদ ঘটার সম্ভাবনাও ছিল। কিন্তু কিচ্ছু হয়নি। এরপর পুজোর আয়োজন। একশো আট পদ্ম, একশো আট বেলপাতার মালা, নীল অপরাজিতার মালা, নৈবেদ্য, পুজোর ভোগ, ফল— কিচ্ছু বাদ থাকত না। পরিচালকদের কড়া নির্দেশ, কাপড়ের মালা প্রতিমাকে পড়ানো হবে না। নৈবেদ্যে সেদ্ধ নয় আতপ চাল ব্যবহার হবে। তিনজন পুরোহিত তত্ত্বাবধানে উপস্থিত থাকতেন। তাঁদের নির্দেশ অনুযায়ী পাঁচদিনের আয়োজন। যা দেখে দর্শকেরও মনে হবে, দেবীর বোধহয় আরও একবার অকালবোধন হল! শিল্প নির্দেশক নাসিফা কিন্তু প্রতিমা গড়ার নির্দেশ দিয়েই থেমে থাকেননি। প্রত্যেক দিন সেটে থাকতেন। দরকারে পুজোর কাজে বা প্রতিমা সাজাতেও হাত লাগিয়েছেন। নন্দিতা-শিবু যে জাতপাত বিশ্বাস করেন না!

উইন্ডোজ প্রযোজনা সংস্থার এই নিষ্ঠা ছুঁয়ে গিয়েছিল দাস বাড়ির অন্দরমহলকেও। শুটে প্রথমে একজনের শাঁখ বাজানোর কথা। সেই অনুযায়ী একটি শাঁখ ছিল। এদিকে পরিচালকদের হঠাৎই মতবদল। ইচ্ছে, দু’জনে শাঁখ বাজাবেন! এদিকে আর একটি শাঁখ মিলবে কোথায়? সঙ্গে সঙ্গে গিন্নি মা তাঁর পুজোর ঘরের শাঁখ তুলে দেন অভিনেতাদের হাতে। একই ভাবে, প্রদীপ, কাঁসর ঘণ্টাও ব্যবহার করতে দিয়েছিলেন তিনি। টিম ‘রক্তবীজ’-এর দাবি, চট করে কেউ পুজোর ঘরের উপকরণ ব্যবহার করতে দেন না। ঈশ্বরের আশীর্বাদে টিম সেই সহযোগিতাও পেয়েছেন।

সূত্রঃ আজকাল

এস/ভি নিউজ