ঘোষিত নীতি অনুযায়ী বাংলাদেশীদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের পদক্ষেপ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

Share

বাংলাদেশের জন্য ঘোষিত ভিসা নীতি অনুযায়ী বাংলাদেশীদের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের পদক্ষেপ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। গত ২৪ মে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণার পর আজ শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত থাকা বাংলাদেশী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করার পদক্ষেপ গ্রহণের তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে দফতরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার এ তথ্য জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, আজ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত থাকা বাংলাদেশীব্যক্তিদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করার পদক্ষেপ নিচ্ছে। এই ব্যক্তিদের মধ্যে আইন প্রয়োগকারী, ক্ষমতাসীন দল এবং রাজনৈতিক বিরোধী দলের সদস্য রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয় তার সমর্থনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এতে আরো বলা হয়, এই ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারে। ভবিষ্যতেও বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত প্রমাণিত ব্যক্তিরা এই নীতির অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারে। এর মধ্যে বর্তমান এবং সাবেক বাংলাদেশী কর্মকর্তা, বিরোধী ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইন প্রয়োগকারী, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা পরিষেবার সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

আমাদের আজকের পদক্ষেপ শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাংলাদেশের লক্ষ্যকে সমর্থন করার জন্য এবং বিশ্বব্যাপী যারা গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে চায় তাদের সমর্থন করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ্য করা হয়েছে।

এর আগে ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের মুখপাত্রের কার্যালয় থেকে গত ২৪ মে অ্যান্টনি জে ব্লিংকেনের এক বিবৃতিতে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন উৎসাহিত করতে ভিসা নীতির ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।

বিবৃতিতে ব্লিংকেনের বরাতে বলা হয়, বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যকে সহায়তা করতে, আমি ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের ধারা ২১২ (এ) (থ্রি) (সি) (থ্রিসি)-এর অধীনে একটি নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করছি। এই নীতির অধীনে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যে কোনো বাংলাদেশী ব্যক্তির জন্য ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপে সক্ষম হবে। এর মধ্যে বর্তমান ও প্রাক্তন বাংলাদেশী কর্মকর্তা/কর্মচারী, সরকারপন্থী ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইন প্রয়োগকারী , বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র গত ৩ মে বাংলাদেশ সরকারকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানায়।

বিবৃতিতে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে এমন বিষয়গুলোও উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে এমন কাজের মধ্যে রয়েছে— ভোট কারচুপি, ভোটারদের ভয় দেখানো, সহিংসতার মাধ্যমে জনগণকে সংগঠিত হবার স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার প্রয়োগ করতে বাধা দেয়া, বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে রাজনৈতিক দল, ভোটার, সুশীল সমাজ বা গণমাধ্যমকে তাদের মতামত প্রচার করা থেকে বিরত রাখা।

ব্লিংকেন আরো বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব ভোটার, রাজনৈতিক দল, সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী, সুশীল সমাজ এবং গণমাধ্যমসহ সকলের। যারা বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে চায় তাদের সকলকে আমাদের সমর্থন দিতে আমি এই নীতি ঘোষণা করছি।

এস/ভি নিউজ