ভিনিউজ : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ব্যক্তি উদ্যোগে, জনগণের অর্থায়নে ও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিষ্ঠিত নাগরিকজনের প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ ২৭ বছরের পথচলায় সর্বসাধারণের সহায়তাধন্য এই জাদুঘর বর্তমানে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সুপরিচিত এক প্রতিষ্ঠান। নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও মূল্যবোধ ছড়িয়ে দিতে এখন প্রয়োজন মুক্তিযুদ্ধের স্থায়ী তহবিল গঠন। ইতিমধ্যেই মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অনেক সুহৃদ এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে জাদুঘর পরিবারের সদস্য হয়েছেন।
এই তহবিল গঠনের লক্ষ্যকে সামনে রেখে আজ ২০ মে, শনিবার বিকাল পাঁচটায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে মিলনায়তনে জাদুঘর পরিবারের নতুন সদস্যদের আনুষ্ঠানিক পরিচিতি ও সম্মাননা প্রদান এবং মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের স্থায়ী তহবিল গঠনের লক্ষ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ের অনুদান গ্রহণের জন্য এক সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে বক্তব্য প্রদান করেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি সারওয়ার আলী, মফিদুল হক, আসাদুজ্জামান নূর এমপি, ট্রাস্টি ও সদস্যসচিব সারা যাকের, স্থাপনা সদস্য সারওয়াত সিরাজ শুক্লা, উদ্যোক্তা সদস্য কামাল কাদীর, প্রতীকী ইট ক্রয়কারী ফারাহ তানজিন সুবর্ণা।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে শনিবার বিকেলে দ্বিতীয় দফায় তহবিল সংগ্রহের এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জাদুঘর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের তহবিলে ইতিমধ্যে ৩০ কোটি টাকা আছে। তাদের লক্ষ্য, ১০০ কোটি টাকা সংগ্রহ। এ অর্থের জন্য দ্বিতীয় দফা তহবিল সংগ্রহ শুরু করা হয়েছে। এই অর্থ থেকে যে লভ্যাংশ আসবে, তা দিয়ে জাদুঘর পরিচালনার খরচ বহন করা হবে।
জাদুঘর মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় দফা তহবিল সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে ২০১৮ সাল থেকে যাঁরা জাদুঘরে সহায়তা করেছেন, তাঁদের স্মারক দেওয়া হয়। পাঁচটি বিভাগে ৪২ জনকে দেওয়া হয় এ স্মারক।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর তহবিল গঠনে ১০ হাজার টাকায় প্রতীকী ইট বিক্রি, ২৫ হাজার টাকায় সাধারণ সদস্য, ১ লাখ টাকায় আজীবন সদস্য, ৫ লাখ টাকায় উদ্যোক্তা সদস্য, ১৫ লাখ টাকায় স্থাপনা সদস্য, ৫০ লাখ টাকায় পৃষ্ঠপোষক সদস্য এবং ১ কোটি বা তার বেশি টাকায় সম্মানীয় পৃষ্ঠপোষক সদস্য পদ দিচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর তহবিলে যেকোনো পরিমাণ অর্থসহায়তাও গ্রহণ করছে।
তহবিলে অর্থ সহায়তা দেওয়ায় আজ যে ৪২ জনকে স্মারক প্রদান করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে স্থাপনা সদস্য হয়েছেন সারওয়াত সিরাজ; উদ্যোক্তা সদস্য হয়েছেন ইরেশ যাকের, আনোয়ারুল কাদীরসহ আটজন; আজীবন সদস্য হয়েছেন মো. নুরুল ইসলাম, অজয় দাসগুপ্তসহ ২৭ জন; সাধারণ সদস্য হয়েছেন দীপঙ্কর চৌধুরী, সৈয়দ শফিকুল হকসহ পাঁচজন এবং প্রতীকী ইট কিনেছেন সুশীল কুমার শীল, মালেকা বেগমসহ ৪১ জন।
সমাবেশে উপস্থিত অনেকেই জাদুঘরের স্থায়ী তহবিল গঠনে আর্থিক সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে ব্যক্তারা জাদুঘরের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে এগিয়ে নেওয়ার কথা জানান।