যুক্তরাজ্যে আশ্রয়প্রার্থীদের রুয়ান্ডায় পাঠানোর হুমকি

101

আবাসন ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় যুক্তরাজ্যে আশ্রয়প্রার্থীদের আফ্রিকায় পাঠিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে। মূলত যেসব আশ্রয়প্রার্থী হোটেল বা আশ্রয়শিবিরের বাজে পরিবেশ নিয়ে অভিযোগ করেন, তাদেরই এই হুমকি দেয় দেশটির কর্তৃপক্ষ। শরণার্থী অধিকারবিষয়ক সংগঠন রিফিউজি অ্যাকশনের নতুন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

রিফিউজি অ্যাকশনের ‘হসটাইল অ্যাকমোডেশন: হাউ দ্য অ্যাসাইলাম সিস্টেম ইজ ক্রুয়েল বাই ডিজাইন’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। যুক্তরাজ্যে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য লন্ডন, ম্যানচেস্টার, ওয়েস্ট মিডল্যান্ডস ও ব্রাডফোর্ডে বেশ কিছু হোটেল ও আশ্রয়শিবির রয়েছে। ওইসব হোটেল ও আশ্রয়শিবিরে বসবাসকারীদের শতাধিক সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

ব্রিটিশ সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন ওইসব হোটেল ও আশ্রয়শিবিরের নাজুক পরিবেশসহ নানা সমস্যার কথা বসবাসকারীদের সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে। প্রতিবেদনমতে, আশ্রয়প্রার্থীরা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ এনেছেন।

সবচেয়ে বড় অভিযোগ হচ্ছে, আশ্রয়প্রার্থীদের হোটেল বা আশ্রয়শিবিরের নাজুক পরিবেশ নিয়ে অভিযোগ করতে নিষেধ করা হয়। হুমকি দিয়ে বলা হয়, কেউ যদি অভিযোগ করে, তাহলে তাকে আফ্রিকার রুয়ান্ডায় পাঠিয়ে দেয়া হবে। সম্প্রতি শরণার্থী প্রত্যাবাসন নিয়ে রুয়ান্ডা সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক সরকার।

যারা নৌকায় করে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্য প্রবেশের চেষ্টা করবে, তাদের আটক করে আফ্রিকার দেশটিতে পাঠিয়ে দেয়া হবে। এরই মধ্যে এমন একটি আইনও প্রণয়ন করেছে ব্রিটিশ সরকার।

প্রতিবেদনমতে, আশ্রয়প্রার্থীদের আরও বলা হয়, তারা যদি আশ্রয়শিবিরের সরবরাহ করা খাবার নিয়ে আপত্তি জানায়, তাহলে পুলিশ ডাকা হবে। এ ছাড়া তাদের হোটেলের ছবি বা ভিডিও তোলা নিষেধ, যাতে তারা পরিবেশ ও খাদ্যের মান নিয়ে কোনো প্রমাণ পেশ করতে পারে।

যুক্তরাজ্যজুড়ে এমন হোটেল ও আশ্রয়শিবিরগুলোতে বর্তমানে ৫০ হাজারের বেশি আশ্রয়প্রার্থী থাকছেন। এসব হোটেল ও আশ্রয়শিবিরকে রিফিউজি অ্যাকশনের প্রতিবেদনে ‘বন্দিশিবির’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘জাতিগত বিদ্বেষ থেকে বিশাল সংখ্যক মানুষকে এভাবে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে’। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।