ওয়েবডেস্ক: নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন, সোমবার পালিত হল বাংলাদেশ দিবস।
বাংলা ভাষার প্রতি গোটা দুনিয়ার বাঙালিদের দায়বদ্ধতার কথা শোনালেন বাংলাদেশ ও ভারতের বিশিষ্ট বাঙালিরা। নিউটাউনে সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটিতে এদিনও দিনভর নানা অনুষ্ঠানে পালিত হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর–সহ বিশিষ্টজনেদের স্মৃতি বিজড়িত সংগঠনটির শতবর্ষ। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরার মন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল, বাংলাদেশের সাংসদ আশেকউল্লাহ রফিক, বাংলাদেশের কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যায়ের উপাচার্য সৌমিত্র শেখর দে, কলকাতায় বাংলাদেশ উপদূতাবাসের প্রতিনিধি আসরাফুল ইসলাম (মিনিস্টার রাজনৈতিক), সাহিত্যিক প্রচেত গুপ্ত, কবি সুবোধ সরকার, বিথী চট্টোপাধ্যায়, ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়, টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের সিইও ড. শঙ্কু ঘোষ, বাংলাদেশের অনলাইন মিডিয়া অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জয়ন্ত আচার্য, সঙ্গীত শিল্পী শ্রেয়শ্রী রায়, ফ্রেন্ডস অফ বাংলাদেশের সদস্য মহম্মদ জিহাদুল ইসলাম, বাংলাদেশের সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের কক্সবাজারের সভাপতি নাজিবউল ইসলাম প্রমুখ।
যতদিন বিশ্বে বাংলা ও বাঙালি থাকবে ততদিন সীমান্তের দু’পারের মানুষকে কেউ বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না। সোমবার সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটিতে নিখিল ভারত বঙ্গ সম্মেলনের শতবর্ষ উদযাপনের সমাপ্তি অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের অতিথিদের সাদর আমন্ত্রন জানিয়ে এমনই মন্তব্য করেন সম্মেলনের সভাপতি ও সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য। তাঁর মতে, আদর্শের বিবর্তন হতে পারে। কিন্তু বাংলা ভাষা কোনও দিন দুর্বল হবে না। অভ্যর্থনা সমিতির চেয়ারম্যান তথা সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটির আচার্য সত্যম রায়চৌধুরী বলেন, কাঁটাতারের বেড়া ডিঙিয়ে দুই বাংলার সাহিত্য, সংস্কৃতিতে মন একাকার হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলন ১০০ বছর ধরে বাঙালির সাহিত্যচর্চাকে ধারন করেছে, বহন করেছে। আরও আগামী ১০০ বছর ধরে ধারন করবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বাংলাদেশীদের আতিথেয়তার প্রশংসার পাশাপাশি সীমান্তের ওপারের প্রতি তাঁর ভাল লাগার কথাও উল্লেখ করেন। স্মরণ করেন ভাষাকে কেন্দ্র করে মহান মুক্তিযুদ্ধের কথা। বাংলাদেশের সাংসদ আশেকউল্লাহ রফিক তাঁর ভাষণে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় জনগণের অবদানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তাঁর ভাষণে উঠে আসে বাংলা ভাষার প্রতি আগ্রাসনের ইতিহাস। বাংলাদেশের কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যায়ের উপাচার্য সৌমিত্র শেখর দে বাঙালির অভিযাত্রার ইতিহাস তুলে ধরেন। তাঁর মতে, বাংলা ভাষা নিয়ে পরীক্ষা–নিরীক্ষা চলতে পারে। তবে বাংলা ও বাঙালিয়ানার সঙ্গে কোনও আপোষ চলবে না। তিন দিনের এই সম্মেলন উপলক্ষে সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটি চত্বরে চাঁদের হাট বসেছে। সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি রাজ্য কৃষি বিপনন দপ্তরের সুফল–এর স্টলটিও আগত অতিথিদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। বাংলার মাটিতে উৎপাদিত সবজির পাশাপাশি ঘি–মধু–জ্যাম–জেলিও প্রবাসীদের আকর্ষিত করছে।