জুন পর্যন্ত খাদ্য নিয়ে শঙ্কা নেই

124

আগামী জুন পর্যন্ত দেশে খাদ্যের কোনো ঘাটতি হবে না। এখনো ১৬ লাখ টনের বেশি খাদ্য মজুদ রয়েছে। তাই ওই সময় পর্যন্ত খাদ্য নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। তার পরও বর্তমান প্রেক্ষাপটে কোনো কারণে যদি আমদানি পণ্যের মজুদ ও সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়, সেটা মোকাবেলার জন্য সচিবদের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।

গত ২৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সচিবদের বৈঠকের পর ২৪ দফা লিখিত নির্দেশনা দেওয়া হয়। সেই নির্দেশনায় যেকোনো সংকটের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে সচিবদের। গতকাল মঙ্গলবার সচিব কমিটির বৈঠক শেষে সচিবালয়ে বিদায়ি মন্ত্রিপরিষদসচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এসব কথা বলেন।

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এটা কোনো রাজনৈতিক বিষয় নয়। কোনো কারণে সরবরাহব্যবস্থা (সাপ্লাই চেইন) বন্ধ হয়ে গেলে, এক মাস, দুই মাসে সমাধান করার জন্য সচিবদের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি হওয়া সচিবসভার ফলোআপ বৈঠক হয়েছে গতকাল। এ ছাড়া ব্যয় সংকোচনে বিভিন্ন খাতে সাশ্রয় কেমন হয়েছে, সভায় সচিবদের কাছ থেকে তা জানা হয়েছে। গত জুন থেকে এ পর্যন্ত বিদ্যুৎ খাতে প্রায় ৪৮ শতাংশ খরচ কমেছে। আপ্যায়ন (এন্টারটেইনমেন্ট) খরচ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েই ৬০ শতাংশের বেশি কমেছে। আর জ্বালানি তেলেও প্রায় ৪০ শতাংশ কম খরচ হয়েছে। সাংবাদিকরা জানতে চেয়েছিলেন সর্বোচ্চ সাশ্রয় কোন মন্ত্রণালয় করেছে। জবাবে মন্ত্রিপরিষদসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বেশি সাশ্রয় করেছে।

খাদ্যশস্য মজুদ আছে ১৬ লাখ টনেরও বেশি

মন্ত্রিপরিষদসচিব বলেন, ‘আগামী জুন পর্যন্ত যে প্রক্ষেপণ দেখা যাচ্ছে, তাতে দেশে খাদ্যের মজুদে কোনো ঘাটতি হবে না। এখনো ১৬ লাখ টনেরও বেশি খাদ্য মজুদ রয়েছে। ফলে আগামী রোজা পর্যন্ত আমাদের কোনো খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা নেই। স্বল্প আয়ের মানুষের সহায়তায় ওএমএসসহ বিভিন্ন খাদ্য সহায়তার কর্মসূচিগুলোও চলবে। ’

বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর উপস্থিত ছিলেন না। তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ব্যাংকিং খাতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্রিফ করবে। বৈঠকে খাদ্যের মজুদ নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। বৈঠকে কৃষিসচিব জানিয়েছেন, এই বোরো মৌসুম শেষ হয়ে গেলে আগামী মে মাস পর্যন্ত খাদ্য উদ্বৃত্ত থাকবে। আর যে খাদ্য আছে, সেটি ছাড়াও এবারে আমনের ফলন ভালো হয়েছে।

গম আমদানির চেষ্টা চলছে

মন্ত্রিপরিষদসচিব বলেন, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের ১২টি দেশে গম বেশি হয়। এসব দেশে যে গম উৎপাদন হয়, সেখানে ঘাটতি হলে পূরণ করা কঠিন। বাংলাদেশে প্রায় ৫৮-৫৯ লাখ মেট্রিক টন ভুট্টা উৎপাদন করা গেছে। আরো গম আনারও চেষ্টা চলছে। সভায় খাদ্যসচিব নিশ্চিত করেছেন, গম আনা হচ্ছে। তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে যে আর্থিক মন্দা চলছে এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে প্রকল্পের এ, বি ক্যাটাগরি করে দেওয়া হয়েছে। সেসব ক্যাটাগরি কঠোরভাবে মেনে চলতে বলা হয়েছে।

বৈদেশিক ঋণকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর অনুরোধ

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘বৈদেশিক ঋণকে সঠিকভাবে কাজে লাগতে অনুরোধ করা হয়েছে। এটা বৈদেশিক মুদ্রার মজুদের জন্য ভালো হবে। যখন আমরা বৈদেশিক ঋণ নিই, তখন একটি বার্ষিক প্রজেকশন (প্রক্ষেপণ) দেখাতে হয়। ’ বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপটে প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।