বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এই তথ্য জানিয়েছেন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত বছর বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে তার বদলে সাইবার নিরাপত্তা আইন করা হয়েছিল। কিন্তু এই আইন নিয়ে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পর্যায় থেকে আপত্তি ওঠে। এ নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনা হয়। এখন আইনটি বাতিলের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিল অন্তর্বর্তী সরকার।
এ বিষয়ে গত ৩০ সেপ্টেম্বর আইন মন্ত্রণালয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬; ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ এবং সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩-এর অধীনে গত আগস্ট পর্যন্ত দেশের ৮টি সাইবার ট্রাইব্যুনালে মোট ৫ হাজার ৮১৮টি মামলা চলমান। বর্তমানে স্পিচ অফেন্স-সম্পর্কিত মোট ১ হাজার ৩৪০টি মামলা চলমান, যার মধ্যে ৪৬১টি মামলা তদন্তকারী সংস্থার কাছে তদন্তাধীন। ৮৭৯টি মামলা দেশের ৮টি সাইবার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন।
এসব মামলার মধ্যে ডিজিটাল মাধ্যমে মুক্তমত প্রকাশের কারণে দায়ের হওয়া মামলাগুলোকে ‘স্পিচ অফেন্স’ এবং কম্পিউটার হ্যাকিং বা অন্য কোনো ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে জালিয়াতিকে ‘কম্পিউটার অফেন্স’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। স্পিচ অফেন্স-সম্পর্কিত মামলাগুলোর মধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের অধীনে ২৭৯টি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে ৭৮৬টি এবং সাইবার নিরাপত্তা আইনের অধীনে ২৭৫টি মামলা চলমান বলে তখন সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছিল।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছিল, বর্তমান সরকার স্পিচ অফেন্স-সংক্রান্ত মামলাগুলো দ্রুত প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ১ হাজার ৩৪০টি স্পিচ অফেন্স-সম্পর্কিত মামলার মধ্যে বিচারাধীন ৮৭৯টি মামলা আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ের মাধ্যমে দ্রুত প্রত্যাহার করা হবে। তদন্তাধীন ৪৬১টি মামলা চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের মাধ্যমে দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হবে।
এস/ভি নিউজ