গত ১০০ বছরের কিছু বেশি সময় ধরে বিশ্বব্যাপী মানুষের বিনোদনের অন্যতম প্রধান উৎস চলচ্চিত্র। প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী হাজার হাজার চলচ্চিত্র নির্মিত ও প্রদর্শিত হয়, যেগুলো থেকে আয় হয় বিলিয়ন ডলারের। একটি ‘সফল সিনেমা’ তৈরির পেছনে থাকে প্রচুর অর্থ, শ্রম, মেধা ও সময়। পৃথিবীর এমন কিছু দেশ রয়েছে যাদের অর্থনীতির অন্যতম উৎসই চলচ্চিত্র। বক্স অফিস আয়ের ভিত্তিতে বিশ্বের বৃহত্তম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির তালিকা নিয়ে এবারের প্রতিবেদন।
যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি যৌথভাবে হলিউড নামে পরিচিত। শিল্প হিসেবে হলিউডের বয়স প্রায় ১২০ বছর। আয়ের দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিও এটিই। ২০২২ সালে হলিউড থেকে মুনাফার পরিমাণ ছিল ১১.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। হলিউডে আয়ের ৪৮% মুনাফা আসে টিকিট বিক্রি থেকে।
হলিউডের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম চলচ্চিত্র নির্মাণ শিল্প হচ্ছে চাইনিজ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। গত এক দশকে, চীনের চলচ্চিত্র ব্যবসা বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৫%। গত ২ বছরে চীনে তৈরি হয়েছে ১,৬১২টিরও বেশি সিনেমা হল। আর শুধু ২০২২ সালেই এ ইন্ডাস্ট্রি থেকে মুনাফা হয়েছে ৬.৬ বিলিয়ন ডলার।
তালিকায় তৃতীয় স্থানে যুক্তরাজ্য। বিশ্ব চলচ্চিত্র আয়ের ১৭ ভাগ দখল করে আছে যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বড় প্রডিউসার কোম্পানি ‘পিনউড স্টুডিওস’। ২০২২ সালে এ ইন্ডাস্ট্রির আয় ৬.৫ বিলিয়ন ডলার। সর্বকালের সেরা আটটি সর্বোচ্চ আয়ের চলচ্চিত্রও তাদেরই।
এশিয়ার বৃহত্তম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি জাপানের, যার আয় বছরে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে টিকে আছে তারা। বিশ্ব চলচ্চিত্রের ৫ ভাগ আয় আসে জাপান থেকে। দেশটিতে বছরে ৬০০’র বেশি সিনেমা নির্মিত হয়।
ভারত হলিউডের পর বিশ্বের সর্বাধিক সিনেমা নির্মাণকারী দেশ। ১০৪ বছর ধরে সিনেমা তৈরি করছে তারা। বছরে মুক্তি পায় প্রায় ২ হাজার সিনেমা। সিনেমা থেকে তাদের বাৎসরিক আয়ের পরিমাণ ১.৯ বিলিয়ন ডলার।
দক্ষিণ কোরিয়া এমন একটি বিরল দেশ, যেখানে আমদানি করা সিনেমার চেয়ে দেশীয় চলচ্চিত্র দেখতেই বেশি পছন্দ করে দর্শক। বিশ্বের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন সিনেমা হলগুলোও সেখানে। কোরিয়ান সরকার এটিকে ভবিষ্যতের অর্থনীতি বলে মনে করে। বিশ্বের সপ্তম ধনী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি তাদের। বছরে আয় ১.৫ বিলিয়ন ডলার।
এছাড়া ফ্রান্স, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া ও মেক্সিকোর ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে বিশ্ব চলচ্চিত্র শিল্পের অন্যতম শক্তি হিসেবে ধরা হয়। ধারণা করা হয়, বিশ্বব্যাপী এ শিল্প থেকে আয় বছরে ৫০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বর্তমানে বাংলাদেশের সিনেমাও যাচ্ছে দেশের বাইরে এবং অবদান রাখছে বিশ্ববাজারে। একদিন হয়তো আমরাও সেরা ইন্ডাস্ট্রির তালিকায় থাকবো, সেই আশা তো করতেই পারি।
এস/ভি নিউজ