বিশেষ প্রতিনিধি: একটু পিছনের দিকে তাকালেই দেখতে পাবো সেই সোনালি শস্যে ভরা ফসল। সেই সোনালি সময়ের নায়কের বর্তমান পরিচয় দাদা-নানা হলেও একসময়ে নায়ক চরিত্রে অভিনয় দিয়ে দর্শক শ্রোতার মনে যিনি সর্বদায় দোলা জাগাতেন। তিনি হলেন আনোয়ার হোসেন। ষাটের দশকের আলোচিত অভিনেতাদের মধ্যে একজন। নবাব সিরাজউদদৌলা ছবিতে দারুণ অভিনয় করেছেন। প্রায় ৫০ বছর ধরে অত্যন্ত দক্ষতা ও নিষ্ঠার সাথে অভিনয় করে আসছেন। শক্তিমান, সৎ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের অধিকারী আনোয়ার হোসেন ১৯৩১ সালে ৬ নভেম্বর, জামালপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলায় তিনি ছায়া-সুনিবিড় জামালপুরেই কাটিয়েছেন। ১৯৫১ সালে ম্যাট্রিক এবং ১৯৫৫ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন।
১৯৫৯ সালে ‘তোমার আমার’ ছবিতে অভিনয়ের মধ্যদিয়ে আনোয়ার হোসেন চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন। প্রথম নায়ক হন সালাউদ্দিন পরিচালিত ‘সূর্যস্নান’ ছবিতে। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক ছবিতে কখনও নায়ক, কখনও অন্যতম প্রধান চরিত্রে। তিনি প্রায় ৭শটির মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবির তালিকায় আছেÑ কাচের দেয়াল, বিষকন্যা, নাচঘর, জোয়ার এল, বন্ধন, আযান, প্রীত না জানে রীতি, দুই দিগন্ত, গৌধূলীর প্রেম, শীত বিকেল, সাতরং, ভাইয়া, উজালা, এতটুকু আশা, নবাব সিরাজউদদৌলা, অবাঞ্ছিত, নীল আকাশের নিচে, জীবন থেকে নেয়া, দীপ জ্বেলে যাই, পালংক চরিত্রহীন, লাঠিয়াল, রূপালী সৈকতে, সূর্য সংগ্রাম, গোলাপী এখন ট্রেনে, রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত, বড় ভালো লোক ছিল, ভাত দে, সখিনার যুদ্ধ, পেনশন প্রভৃতি। পরবর্তী সময়ে তিনি পার্শ্ব চরিত্রেই নিয়মিত অভিনয় করেছেন। শেষ ছবি কাজী মোর্শেদ-এর ‘ঘানি’তে ২০০৬ সালে অভিনয় করেছেন।
শুধু চলচ্চিত্র নয়, মঞ্চেও তিনি প্রাণবন্ত অভিনয় করেছেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি অভিনয়ের সাথে জড়িত ছিলেন। ১৯৫১ সালে আনন্দ মোহন কলেজের প্রথম মঞ্চ নাটক ‘পদক্ষেপ’-এ অভিনয় করেন। এরপর ময়মনসিংহ, ঢাকা। এছাড়াও বহু স্থানে মঞ্চ নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি।
ব্যক্তি জীবনে তিনি চার ছেলে ও এক মেয়ের গর্বিত বাবা। ছেলেরাই সবাই প্রবাসী, একমাত্র মেয়ে বিবাহিতা। পিতা মরহুম নজীর হোসেন, মাত সাঈদা খানম। টেলিভিশন, নাটক ও রেডিওতে তিনি অসংখ্যবার অভিনয় করেছেন। বর্তমানে তিনি নাটক, সিনেমা দেখে আর বই পড়ে সময় কাটান।