রাজধানীতে যানজটে দৈনিক ৮২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট

ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহারের কারণে রাজধানী ঢাকায় যানজট বাড়ছে। প্রতিদিন যানজটে প্রায় ৮২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে বলে তথ্য উঠে এসেছে বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবসের আলোচনা সভায়।

বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস উপলক্ষে রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা পরিবহন কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) আলোচনা সভায়  এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়।

‘ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার সীমিত করি, হাঁটা, বাইসাইকেল ও গণপরিবহন বান্ধব শহর গড়ি’ শিরোনামের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হক।

তিনি বলেন, ঢাকা শহরে চার কোটি ট্রিপের মধ্যে ৩৮ শতাংশ ট্রিপ সংঘটিত হয় হেঁটে। ফুটপাতও এ শহরে অনেক অপ্রশস্ত হয়ে গেছে। পথচারীদের প্রাধান্য দিয়ে নগর যাতায়াত ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য আমাদের চেষ্টা থাকবে। এ শহরে দেখা যায় একটি শিশুর জন্য একটি ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার হচ্ছে। ফলে যানজট বাড়ছে এবং গণপরিবহনের সংখ্যা বাড়লেও শৃঙ্খলা না থাকায় সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।

তিনি জানান, রাজধানীর একটি সড়ককে যেন সপ্তাহে একদিন গাড়িমুক্ত রাখা যায়, সে জন্য ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করবেন।

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স-বিআইপির সভাপতি ড. আদিল মোহাম্মদ খান। মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, গাড়িভিত্তিক উন্নয়নের দুষ্টুচক্রের ফলে রাস্তা, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ফ্লাইওভারের সংখ্যা বেড়েছে, গাড়িও বেড়েছে, সেই সঙ্গে বেড়েছে যানজট এবং দূষণ। যানজটের কারণে রাজধানীতে দিনে বাংলাদেশে ‘কার ফ্রি ডে’ অনেক বছর ধরে উদ্‌যাপন করা হলেও ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণে নীতি নির্ধারণী মহল থেকে কোনো স্থায়ী উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। নীতি নির্ধারণী পর্যায় থেকে নগর এলাকায় ব্যক্তিগত গাড়ির পরিমাণ সুনির্দিষ্ট করা, ব্যক্তিগত গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে হবে।

ড. আদিল মুহাম্মদ খান তার বক্তব্যে ‘কার ফ্রি স্কুল জোন’ গড়ে তোলা, পথচারীবান্ধব রাস্তা তৈরি, ব্যক্তিগত গাড়ির প্রণোদনা সীমাবদ্ধ করা, বাস রুট যৌক্তিকীকরণ প্রকল্পের সেবা ও পরিধি বৃদ্ধি, গণপরিবহন তথা বাস, রেল ও নৌপথ এবং হাঁটার উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার। তিনি বলেন, ঢাকা শহরে ২০২৩ সাল পর্যন্ত নিবন্ধিত মোট মোটরযানের মধ্যে গণপরিবহন মাত্র ১০ শতাংশ। অর্থাৎ ব্যক্তিগত গাড়ির অনুপাতে গণপরিবহনের সংখ্যা বাড়ছে না। জনবান্ধব নগর যাতায়াত ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার সীমিত করে বহু মাধ্যমভিত্তিক সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই।

২০০১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর বিশ্বের ৩৩টি দেশের প্রায় ১ হাজার শহরে বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস পালন করা হয়। বর্তমানে প্রতি বছর প্রায় ৪ হাজার শহরে দিবসটি পালিত হয়ে থাকে।

এস/ভি নিউজ

পূর্বের খবরশপথ নিলেন শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট দিসানায়েকে
পরবর্তি খবরজামায়াতে ইসলামীঃ অমিত শাহের বক্তব্য বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ইঙ্গিত বহন করে না