দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান শিরোনাম ‘ভ্যানে লাশের স্তূপ, ভয়ঙ্কর ভিডিও, একটি অনুসন্ধান’।
খবরে বলা হয়েছে, ভ্যানে লাশের স্তূপ সাজানোর ১৪ সেকেন্ডের যে ভিডিওটি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, সেটি গত পাঁচই অগাস্ট তারিখে সাভারের আশুলিয়া বাইপাইল এলাকার একটি ঘটনা বলে অনুসন্ধানে জানতে পেরেছে মানবজমিন।
গত পাঁচই অগাস্ট দুপুরে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালানোর পরে বাইপাইল এলাকায় বিজয় মিছিল বের হয়।
মিছিল শেষে বিকালে উত্তেজিত জনতা আশুলিয়া থানা ঘেরাও করে। তারা থানা ভবনে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। কেউ কেউ গেট ভাঙতে এগিয়ে যান।
এক পর্যায়ে পুলিশ ছাত্র-জনতাকে উদ্দেশ্য করে গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থলেই অনেকে নিহত হন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সেদিন থানার পাশেই ইসলাম পলিমারস অ্যান্ড প্লাস্টিসাইজারস লিমিটেডের অফিসার ফ্যামিলি কোয়ার্টারের দেয়াল ঘেঁষে গুলিবিদ্ধ সাতজনের মরদেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে ছিল।
পুলিশ মরদেহগুলো একত্রিত করে ভ্যানের উপর স্তূপ করে রাখে, যা ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে দেখা গেছে।
পরে মরদেহগুলোতে আগুন দেওয়া হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রকৃত ঘটনা খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে মানবজমিনকে জানিয়েছে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আহম্মদ মুঈদ। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
একই ঘটনা নিয়ে প্রধান শিরোনাম করা হয়েছে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায়, ‘বীভৎস, রোমহর্ষক’।
খবরে বলা হয়েছে যে, ভ্যানে লাশের স্তূপ সাজানোর ভাইরাল ভিডিওটি সাভারের আশুলিয়ার। এতে আরও বলা হয়েছে যে, গত পাঁচই অগাস্ট বিকেলে ছাত্র-জনতা আশুলিয়া থানা ঘেরাও করলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ এফ এম সায়েদ আহমেদ বাইরের উত্তেজিত জনতাকে নিবৃত করার চেষ্টা করেন।
তখন আন্দোলনকারীরা পুলিশকে উদ্দেশ্য করে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকে।
ছাত্র-জনতা পুলিশকে আত্মসমর্পণ করতে বললে মি. আহমেদ আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, “আমরা হেরেছি। আপনারা জিতেছেন। আমাদের মাফ করে দেন। সবাই বাড়ি ফিরে যান।”
কিন্তু আন্দোলনকারীরা সরেনি। পরে পুলিশ গুলি চালালে ঘটনাস্থলেই অনেকে নিহত হয়। পুলিশ এরপর মরদেহগুলো সংগ্রহ করলেও, তাতে তারা আগুন দেননি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
বলা হয়েছে যে, সংগ্রহের পর তারা মরদেহগুলো থানায় পার্ক করা একটি পিকআপ ভ্যানে রেখেছিল, যেটিতে বিক্ষুব্ধ মানুষ আগুন দিয়েছিল।
‘অর্থ-ক্ষমতা-প্লট-প্রাইজ পোস্টিংয়ের ওপর দাঁড়িয়ে ছিল কর্তৃত্ববাদী শাসন’– দৈনিক বণিক বার্তার প্রধান শিরোনাম এটি।
খবরে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার সরকার গত দেড় দশকে একচ্ছত্র আধিপত্য ও নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে প্রশাসন কর্মকর্তাদের নানা সুযোগ-সুবিধা দিয়ে ব্যবহার করেছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলো আমলাদের পাশাপাশি চলে যায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণে। এজন্য পুরস্কার বা টোপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে অর্থ, ক্ষমতা, প্লট ও প্রাইজ পোস্টিং।
এমনকি নারীদেরও অনৈতিকভাবে কাজে লাগানোরও নজির রয়েছে বলেও খবরে উল্লেখ করা হয়েছে।
এসবের মাধ্যমে বাংলাদেশে কায়েম হয়েছে এক ধরনের ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থা, যা পুরোপুরি কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়েছিল শেখ হাসিনার ক্ষমতা বলয়ে। একই সঙ্গে বিএনপিসহ প্রধান বিরোধী দলগুলোকে যেতে হয়েছে ব্যাপক দমন-পীড়নের মধ্য দিয়ে।
‘আগে সংস্কার পরে নির্বাচন’- দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার প্রধান শিরোনাম এটি। খবরে বলা হয়েছে যে, শনিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নির্বাচন ও সংস্কার প্রশ্নে জাতীয় পার্টি, গণফোরামসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রয়োজনীয় সংস্কার করে ‘যৌক্তিক’ সময়ের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছেন জাতীয় পার্টিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের নেতারা।
তারা বলেছেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে এটা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্যও ভালো, রাজনৈতিক দলের জন্যও ভালো, দেশের জন্যও ভালো।
তবে সংস্কার করার আগে নির্বাচন কোনো অবস্থাতে বাঞ্ছনীয় নয়। তাই আগে সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে।
রাজনৈতিক দলের মতামত ও প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস কী বলেছেন জানতে চাইলে নেতারা বলেন, প্রধান উপদেষ্টা এটাই বলেছেন যে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে প্রত্যেকটা বিষয়ে।
খবরে আরও বলা হয়েছে, বৈঠকে একেক দল একেক ধরনের দাবি তুললেও নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে কোনো কথা হয়নি বলে জানিয়েছেন নেতারা।
দৈনিক প্রথম আলোর প্রধান শিরোনাম ‘৭২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে রেললাইন, ট্রেন চলে কম’।
খবরে বলা হচ্ছে যে, রাজবাড়ী থেকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মাণ ও পুরোনো লাইন সংস্কারে দুই হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয় করার সময় বলা হয়েছিল, এই রেললাইন দিয়ে দিনে ১৪টি ট্রেন চলাচল করবে।
২০১৮ সালের নভেম্বরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন এই রেলপথ উদ্বোধন করেন। এখন এই পথে ট্রেন চলছে মাত্র দুটি।
রাজবাড়ী–গোপালগঞ্জের মতো ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নির্মিত আরও আটটি রেললাইন সক্ষমতার তুলনায় অনেক কম ব্যবহৃত হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
সেগুলো নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৭১ হাজার ৫২৫ কোটি টাকা। ফলে রেললাইনগুলোকে বলা হচ্ছে ‘সাদা হাতি’। অর্থ্যাৎ প্রকল্পগুলোতে প্রচুর ব্যয় হলেও, সেগুলোর সুফল পাওয়া যায় না।
সূত্রের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ রেলওয়ের ওই সব প্রকল্পের কোনোটি নেওয়া হয়েছিল রাজনৈতিক বিবেচনায়, কোনোটি অর্থায়নকারী কোনো দেশের পরামর্শে, কোনোটি ঠিকাদারদের তৎপরতায়।
বাংলাদেশি প্রভাবশালী ঠিকাদারেরা কাজ পাওয়ার যোগ্যতা বাড়াতে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সামনে রাখেন বলেও খবরে উল্লেখ করা হয়েছে।
সর্বজনীন পেনশন স্কিমের বর্তমান অবস্থা নিয়ে দৈনিক সমকাল পত্রিকার প্রধান শিরোনাম ‘সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি স্থবির’।
খবরটিতে বলা হচ্ছে, দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গত এক মাসের বেশি সময় বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। তার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির কার্যক্রমেও।
যথাযথ সম্ভাব্যতা যাচাই ছাড়াই গত বছরের আগস্টে চালু হওয়া এ কার্যক্রমে নেমে এসেছে স্থবিরতা।
আগের দুই মাসে এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা দুই লাখ ছাড়িয়ে গেলেও গত দেড় মাসে মাত্র ২০ হাজার নতুন গ্রাহক যুক্ত হয়েছেন।
এ কার্যক্রম জোরদার ও পেনশন কর্তৃপক্ষের প্রাতিষ্ঠানিক রূপরেখা নির্ধারণে তিন হাজার ৮০০ কোটি টাকার নতুন প্রকল্প নেওয়ার কথা থাকলেও আপাতত তা হচ্ছে না।
অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষে বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, পুরোপুরি প্রস্তুতি না নিয়েই ভোটের আগে জনগণকে তুষ্ট করতে তড়িঘড়ি করে সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি নেয় ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার।
শুরুর সময়েই প্রস্তুতির ঘাটতির অভিযোগ তুলে এ কার্যক্রমের ভবিষ্যৎ নিয়ে তখন প্রশ্ন তুলেছিলেন অর্থনীতিবিদরা।
তবে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ কার্যক্রম বন্ধ করে দেবে– এমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
‘ব্যবসা-বিনিয়োগে ধীরগতি’– দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান শিরোনাম এটি।
খবরে বলা হয়েছে, অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য আর বিনিয়োগে দেশ এখন কঠিন সময় পার করছে। ছোট-বড় সব ব্যবসাই রীতিমতো গতিহীন। আর বিনিয়োগ পরিস্থিতিও প্রায় স্থবির।
কারখানাগুলোতে গ্যাসসংকট চরমে। বন্দরে কনটেইনারজট। মহাসড়কে যানবাহনের ধীরগতি। ডলার সংকটের পাশাপাশি সংস্কার পদক্ষেপের অংশ হিসেবে অনেক ব্যাংকে এলসি খোলা ও লেনদেনে কড়াকড়ি, উচ্চ সুদের হার, গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চাহিদা কমে যাওয়া আর বৈশ্বিক ক্রেতাদের আস্থাহীনতাকেই মূলত ব্যবসা ও বিনিয়োগ স্থবিরতার জন্য দায়ী করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, এই স্থবিরতা যেমন ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা-বিনিয়োগে চলছে, তেমনি ভুগছে বড় বড় শিল্প খাতও। দেশের আমদানি-রপ্তানি খাতের শীর্ষ উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, বহুমুখী সংকটে তাঁদের ব্যবসা ও উদ্যোগ।
কারো কারো ব্যবসা ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে। কেউ কেউ বলছেন, তাঁরা মুনাফা করা দূরের কথা, এখন প্রতিদিনই লোকসান গুনছেন।
এস/ভি নিউজ