ভারতের থেকে যুক্তরাষ্ট্রর শেখা উচিত: বাইডেন

ভারতের অভিজ্ঞতা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা নেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। শনিবার কোয়াড সংগঠনের নেতাদের সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে কোয়াডের বৈঠকে নাম না করে চীনকে স্পষ্ট বার্তা দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যুক্তরাষ্ট্রের উইলমিংটনে কোয়াড (ভারত, জাপান, আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়া) সম্মেলনের শুরুতেই মোদি স্পষ্টভাবে বলে দেন, ‘মুক্ত, গঠনমূলক, সমৃদ্ধশালী ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় (অঞ্চলই হল) আমাদের অগ্রাধিকারের (বিষয়)।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিয়ো কিশিদা এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজের উপস্থিতিতে মোদি আরও বলেন, ‘আমরা কারও বিরুদ্ধে নই। আমরা সবাই নিয়ম মেনে চলা আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা; সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি সম্মান বজায় রাখার এবং শান্তিপূর্ণভাবে সব বিষয়ের সমাধানের পক্ষে আছি।’

চীনকে বার্তা মোদির

কোনো দেশের নাম মুখে না আনলেও মোদির সেই মন্তব্যের নিশানায় যে চীন ছিল, তা বুঝতে কারও অসুবিধা হয়নি। কারণ দক্ষিণ চীন সাগর এবং পূর্ব চীন সাগরকে নিজেদের কুক্ষিগত করে রাখতে চায় বেইজিং। পুরো দক্ষিণ চীন সাগরের ওপরে তাদের একার আধিপত্য আছে বলে বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। যদিও ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স, ব্রুনেই এবং তাইওয়ান সেই ক্ষমতার আস্ফালন মেনে নেয় না।

কোয়াড থাকবে…

আর সেই ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনা আগ্রাসন রুখতে কোয়াড যে আগামীদিনেও হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করবে, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন মোদি। বিশেষত কোয়াড আগে থাকলেও মূলত বাইডেনের আমলেই সেই চতুর্দেশীয় অক্ষের গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়। তিনিই কোয়াডকে রাষ্ট্রনেতাদের মঞ্চ হিসেবে তুলে ধরেন। কিন্তু কয়েকদিন পরে বাইডেন আর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট থাকবেন না। সেই পরিস্থিতিতে আবারো কোয়াডের গুরুত্ব কমে যাবে কিনা, তা নিয়ে একাধিক মহলে প্রশ্ন উঠছিল।

সেইসব যাবতীয় শঙ্কা দূরে সরিয়ে রেখে শনিবার (স্থানীয় সময় অনুযায়ী) মোদির কাঁধে হাত রেখে বাইডেন বলেন, ‘নভেম্বরের অনেক পরেও (কোয়াড থাকবে)। নভেম্বরের অনেক পরেও (কোয়াড থাকবে)।’ বাইডেনের সেই মন্তব্য শুনে মোদিও হেসে ফেলেন। ‘থাম্বস আপ’ দেখান ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

‘মানবজাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ কোয়াড’

সেই রেশ ধরেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের বার্তাটা স্পষ্ট – কোয়াড থাকবে। সাহায্য করতে (কোয়াড থাকবে)। জোট বাঁধতে (কোয়াড থাকবে)। একে অপরের পরিপূরক হয়ে উঠতে (কোয়াড থাকবে)।’ সেইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের এই বৈঠক এমন একটা সময় হচ্ছে, যখন উত্তেজনা এবং সংঘাতে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে বিশ্ব। সেই পরিস্থিতিতে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বজায় রেখে কোয়াড যে কাজ করছে, তা পুরো মানবজাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’

ভারত এবং মোদির প্রশংসায় কোয়াড নেতারা

তারইমধ্যে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের জন্য ভারত এবং মোদির প্রশংসা করেছেন কোয়াডে নেতারা। যিনি কোয়াডের সবথেকে ‘সিনিয়র’ রাষ্ট্রনেতা হয়ে উঠবেন। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবার জানান যে মোদির নেতৃত্বে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রধান শক্তি হয়ে উঠেছে ভারত। একইসুরে মোদির পদক্ষেপের প্রশংসা করেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী।

আরও একধাপ এগিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন আবার জানান, ভারত মহাসাগর অঞ্চলে যেভাবে ভারত নেতৃত্ব দিয়েছে, তা থেকে শেখা উচিত যুক্তরাষ্ট্রের। সেইসঙ্গে ভারতের অভিজ্ঞতা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা নেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন বাইডেন।

এস/ভি নিউজ

পূর্বের খবরকোয়াড সম্মেলনে বাইডেন-মোদির আলোচনায় বাংলাদেশ প্রসঙ্গ
পরবর্তি খবররাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারে দুটি কমিটি গঠন