কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) প্রথম প্রান্তিকে অর্থাৎ জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৬৩ কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৭.৫৮ শতাংশ কম।
ঊর্ধ্বমুখী রেমিট্যান্স প্রবাহের ওপর ভর করে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) দেশের ব্যালান্স অব পেমেন্টের (বিওপি) অন্যতম উপাদান চলতি হিসাবের ঘাটতি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৯৩ শতাংশ কমে এসেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে দেশের চলতি হিসাবের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১২৭ মিলিয়ন ডলারে। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১.৮৩ বিলিয়ন ডলার।
আর্থিক হিসাবে উদ্বৃত্ত : ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে আর্থিক হিসাবে (ফিন্যানশিয়াল অ্যাকাউন্ট) উদ্বৃত্তের পরিমাণ ছিল ৪.৫৪ বিলিয়ন ডলার। তবে ঘাটতি নিয়ে শুরু হয় ২০২৪-২৫ অর্থবছর। অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) ফিন্যানশিয়াল অ্যাকাউন্টে ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার। তবে জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে এই সূচকে ৫৬ কোটি ডলারের উদ্বৃত্ত হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১২৩ কোটি (১.২৩ বিলিয়ন) ডলার।
সামগ্রিক লেনদেনে ঘাটতি ১.৪৬ বিলিয়ন ডলার : সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যে (ওভারঅল ব্যালান্স) ঘাটতি কমেছে। জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে এই সূচকে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১.৪৬ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের একই সময়ে এই ঘাটতি ছিল ২.৮৫ বিলিয়ন ডলার।
এফডিআই কমেছে ১৫ শতাংশ : ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ৩০ কোটি ডলারের নিট এফডিআই (সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ) এসেছে দেশে। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই অঙ্ক ছিল ৩৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার। এই হিসাবে এই তিন মাসে এফডিআই কমেছে ১৫ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আমদানি করার ক্ষেত্রে এখন নজরদারি বাড়াতে হবে, যাতে ওভারইনভয়েসিং ও আন্ডারইনভয়েসিং আরো বেশি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা যায়। চাহিদা না থাকায় আমদানির আড়ালে টাকা পাচার এরই মধ্যে কমেছে। সেটিকে আরো কমিয়ে নিয়ে আসতে হবে। তাহলে বাণিজ্য ঘাটতি আরো কমে আসবে। তাঁরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে দ্রুত রপ্তানি খুব বেশি বাড়ানো কঠিন। আগের সরকার তাদের সাফল্য প্রচারের জন্য রপ্তানি নিয়ে ভুল তথ্য দিয়েছে, বাড়িয়ে দেখিয়েছে।
অন্যদিকে অন্তর্বর্তী সরকার সঠিক তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করছে। ফলে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি খুব বেশি দেখাচ্ছে না। চট করে এ জায়গাটির প্রবৃদ্ধি অনেক বেশি আনা কঠিন।
এস/ভি নিউজ