কলকাতার এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া একটি শিশু বাংলা চলচ্চিত্রের মহারাজায় পরিণত হবেন, এটা কে জানত? কে জানত বাউণ্ডুলে স্বভাবের সেই ছেলেটি একদিন বাংলা চলচ্চিত্রের রাজ করবেন! কিন্তু অদম্য ইচ্ছা, কঠোর পরিশ্রম, আর একাগ্রতা মানুষকে পৌঁছে দিতে পারে সফলতার চূড়ান্ত শিখরে। সেটার প্রমাণ রেখে গেছেন বাংলা চলচ্চিত্রের নায়ক রাজ রাজ্জাক। সিনেমার নায়ক হওয়ার অদম্য ইচ্ছা তাকে বানিয়েছে জিরো থেকে হিরো। নিজ চেষ্টা ও স্বপ্রতিভায় তিনি অভিনয়ের বিশাল ভুবনে জায়গা করে নিয়েছিলেন
আজ জন্মদিন বাংলা চলচ্চিত্রের মধ্যমণি ও কিংবদন্তি অভিনেতা রাজ্জাকের। ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি কলকাতার টালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন রাজ্জাক। নায়করাজ নামে পরিচিত হলেও তার পরিবারিক নাম আবদুর রাজ্জাক।
১৯৯০ সাল পর্যন্ত বেশ দাপটের সঙ্গে ঢালিউডে সেরা নায়ক হয়ে অভিনয় করেন তিনি। রাজ্জাক পরিচালনা করেছেন ১৬টি চলচ্চিত্র। গড়ে তোলেন রাজলক্ষী প্রোডাকশন হাউজ। প্রযোজক হিসেবে তার যাত্রা হয় ‘রংবাজ’ সিনেমার মাধ্যমে। এরপর বেশ কিছু সিনেমা প্রযোজনাও করেছেন এই কিংবদন্তি। রাজ্জাক ১৯৬২ সালে খায়রুন নেসার (লক্ষ্মী) সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির ঘরে জন্ম নেন রেজাউল করিম (বাপ্পারাজ), খালিদ হোসেইন (সম্রাট), নাসরিন পাশা শম্পা, রওশন হোসেন বাপ্পি, আফরিন আলম ময়না।
দেশের শিল্প-সংস্কৃতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখার স্বীকৃতি হিসেবে নায়করাজ ২০১৫ সালে ‘স্বাধীনতা পদক’ পুরস্কারে ভূষিত হন। শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন মোট পাঁচবার। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার পান ২০১৩ সালে। এছাড়াও বাচসাস পুরস্কার, মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন তিনি। ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে ৭৫ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে যান ঢাকাই চলচ্চিত্রের এ অবিসংবাদিত রাজা।