পোপ ফ্রান্সিস: নাইটক্লাবের নিরাপত্তাকর্মী থেকে ক্যাথলিকদের প্রধান ধর্মগুরু

 

 

 

১৯৩৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসের একটি দরিদ্র পরিবারে জন্ম হয় এক শিশুর, যার নাম রাখা হয় জর্জ মারিও বেরগোগলিও। তবে তার পরিবার কিন্তু আর্জেন্টাইন নয়। ফ্যাসিবাদের নিপীড়ন থেকে বাঁচতে ইতালী থেকে আর্জেন্টিনায় পালিয়ে আসেন তার বাবা-মা। পরে সেখানে থাকতেই জন্ম হয় মারিওর।

পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে মারিও ছিলেন সবার বড়। তরুণ বয়সে নিজের ও পরিবারের দায়িত্ব ঘাড়ে এসে পড়ায় তিনি ঝাড়ুদার-নাইটক্লাবে নিরাপত্তাকর্মীর মতো চাকরি করেছেন বহু বছর। কে জানত ক্ষুধার তাড়নায় নাইটক্লাবের সেই গার্ড একদিন হবেন ক্যাথলিকদের প্রধান ধর্মীয় গুরু?

জর্জ মারিও এসবের পাশাপাশি চালিয়ে গেছেন পড়াশোনা। রসায়নে স্নাতক অর্জন করেন তিনি। কাজ করেছেন স্থানীয় এক কারখানাতেও। সেখানে কাজ করতে গিয়ে তাঁর পরিচয় হয় এস্তার বালেস্ত্রিনোর সঙ্গে। যিনি আর্জেন্টিনার সামরিক স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে বেশ সরব ছিলেন। পরে এস্তারকে ব্যাপক নির্যাতন করে হত্যা করা হয় বলে শোনা যায়। তাঁর দেহও আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরে সোসাইটি অব জিসাস নামের একটি ক্যাথলিক ধর্মীয় গোষ্ঠীর সদস্য হন তিনি। এই গোষ্ঠীর সদস্যদের জেসুইট (Jesuit) বলা হয়। ওই গোষ্ঠীর সদস্য থাকাকালে তিনি দর্শন, সাহিত্য ও মনোবিজ্ঞানে পড়াশোনা করেন। পরে যাজকত্ব লাভের পর দ্রুত পদোন্নতি পান এবং ১৯৭৩ সালে আর্জেন্টিনার প্রাদেশিক প্রধান নিযুক্ত হন।

পোপ বেনেডিক্ট ষোড়শ পদত্যাগ করার পর ২০১৩ সালের মার্চ মাসে কার্ডিনাল জর্জ মারিও বেরগোগলিও ক্যাথলিক চার্চের নেতৃত্ব পান। পোপ ফ্রান্সিস হলেন ইতিহাসের প্রথম জেসুইট পোপ। বিবিসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, পোপ ফ্রান্সিস স্থানীয় ট্যাঙ্গো নাচ খুব পছন্দ করতেন। এ ছাড়া স্থানীয় ফুটবল ক্লাব সান লোরেঞ্জোর একজন বড় সমর্থক ছিলেন তিনি।

ছোটবেলা একবার নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে তাঁর জীবন প্রায় বিপন্ন হয়ে পড়েছিল। সে সময় ফুসফুসের একটি অংশ কেটে ফেলা হয়। এ কারণে সারা জীবনই তিনি সংক্রমণের ঝুঁকিতে ছিলেন। বয়স্ক অবস্থায় তিনি ডান হাঁটুর ব্যথায় ভুগতেন, যেটিকে তিনি ‘শারীরিক অপমান’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। ৮৮ বছর বয়সে ভ্যাটিকানের কাসা সান্তা মার্তায় নিজ বাসভবনে আজ সোমবার মারা গেছেন তিনি।

পূর্বের খবরঅব্যাহতি পেল এনসিপি’র যুগ্ম সদস্যসচিব সালাউদ্দিন তানভীর
পরবর্তি খবরমার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সের সফর থেকে কী পেতে পারে ভারত?