পানি ছাড়ার আগে জানানোর বিষয়টি পালন করেনি ভারত— এটি কালের কণ্ঠ পত্রিকার প্রথম পাতার একটি প্রতিবেদন। শিরোনামটি মূলত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের একটি উদ্ধৃতি।
তিনি বলেছেন, “উজানের দেশে যদি অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হয় এবং পানি ছেড়ে দেওয়ার প্রয়োজন হয়, তাহলে ভাটির দেশকে আগে থেকেই জানানোর প্রয়োজন হয়, যাতে ভাটির দেশের লোকজন নিজেদের প্রস্তুত করতে পারে এবং লোকজনকে সরানো যায়। কিন্তু এবার এই জানানোর বিষয়টি ভারত প্রতিপালন করেনি। ভারতের সঙ্গে আমাদের চুক্তিতেও এমনটি বলা হয়েছে।”
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান গতকাল শুক্রবার দুপুরে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার মশাজান খোয়াই নদীসংলগ্ন বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
সিন্ধু কমিশন ৬৪ বছর ধরে কাজ করছে সফলভাবে— বণিক বার্তা পত্রিকার এই দ্বিতীয় প্রধান শিরোনামে বলা হচ্ছে, সিন্ধু অববাহিকাকে ঘিরে হওয়া পানির হিস্যাটি দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে পুরনো ও দীর্ঘ সময় ধরে চালু থাকা আন্তর্জাতিক পানি বণ্টন চুক্তি।
‘ইন্ডাস ওয়াটার ট্রিটি’ বা সিন্ধু জল চুক্তি নামে পরিচিত এ সমঝোতাটি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
সিন্ধু এবং তার পাঁচ উপনদ বিতস্তা (ঝিলম), চন্দ্রভাগা (চেনাব), ইরাবতী (রবি), বিপাশা (বিয়াস), শতদ্রু (সতলুজ) ভারত থেকে পাকিস্তানের মধ্যে প্রবাহিত হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে এ নদগুলোর পানি ন্যায্যতার সঙ্গে ভাগাভাগি করাই এ চুক্তির লক্ষ্য। আর তা বাস্তবায়ন এবং চুক্তি সম্পর্কিত যেকোনো বিরোধ নিষ্পত্তিতে গঠন হয় ‘সিন্ধু কমিশন’। গত ৬৪ বছর এ কমিশন বেশ সফলতা দেখিয়েছে।
অপরদিকে ১৯৭২ সালের মার্চে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ‘ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী, সহযোগিতা এবং শান্তি চুক্তি’ সই হয়। এ চুক্তি অনুসারে যৌথ নদী ব্যবস্থাপনার জন্য গঠিত হয় যৌথ নদী রক্ষা কমিশন (জেআরসি)। তবে ৫২ বছর পার হলেও আন্তঃদেশীয় নদীগুলোর পানির সুষম বণ্টন নিশ্চিতে এ কমিশন কোনও ভূমিকা রাখতে পারেনি।
ডুবন্ত জনপদে স্বজনের সন্ধানে— বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় চলমান আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে করা এই প্রতিবেদনটি সমকাল পত্রিকার প্রধান শিরোনাম।
এবারের সবচেয়ে বেশি বন্যাকবলিত জেলা ফেনী ঘুরে সমকালের প্রতিবেদক লিখেছেন, বিভীষিকার রাত পেরিয়ে গতকাল শুক্রবার উঁকি দেয় সূর্য । তার সেই আলোতেই ভেসে ওঠে বিস্তীর্ণ ডুবন্ত জনপদ। যতদূর চোখ যায় বসতভিটার কোনো অস্তিত্ব নেই।
স্মরণকালের ভয়াবহ বানের তোড়ে ফেনীর লাখ লাখ মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে এখন। তাদের চোখেমুখে এখনও সেই রাতের ভয়াবহতা। ধু-ধু জলের প্রান্তরে এখন শুধুই ক্ষুধা, কান্না, আহাজারি আর আর্তনাদ। চারদিকে মানুষের বাঁচার আকুতি।
প্রাণে বাঁচতে কেউ টিনের চালে, গাছে কিংবা ছাদে আশ্রয় নিয়েছেন। ফেনীর ফুলগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়ার অবস্থা সবচেয়ে ভয়াবহ। আটকে পড়াদের উদ্ধারে যাবে, সে উপায় হাতে নেই স্বজনের। খোঁজ না পাওয়ায় বাড়ছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। পানির তোড়ে সেসব এলাকায় যাওয়া যেমন ঝুঁকির, তেমনি মিলছে না উপযুক্ত বাহন।
ফলে আফসোস, আক্ষেপ ও ক্ষোভের শেষ নেই। মোবাইল নেটওয়ার্ক কিংবা ইন্টারনেট সব যোগাযোগই বিচ্ছিন্ন দুর্গত অঞ্চলে। বাঁচা-মরার খবর পাওয়াও এখন হয়ে উঠেছে দুষ্কর। সেই সঙ্গে উদ্ধার তৎপরতা ও ত্রাণ বিতরণ নিয়েও রয়েছে ক্ষোভ।
44 lakh marooned— এটি দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার প্রধান শিরোনাম। এখানে বলা হয়েছে, প্রবল স্রোতে গতকাল কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের আরও কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে এবং গোমতী ও হালদা নদীর বাঁধের কিছু অংশ ভেসে গেছে।
কুমিল্লা ও চট্টগ্রামসহ দেশের ১১টি জেলা এখন বন্যাকবলিত। এইসব জেলায় ৪৪ লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছে এখনও।
বাংলাদেশ সংবাস সংস্থা বা বাসসের বরাত দিয়ে এখানে বলা হয়েছে, কন্যাকবলিত জেলাগুলিতে ১৫ জন মারা গেছে এবং ৪৮ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে, এখন পর্যন্ত ৭৫৭— এটি দৈনিক প্রথম আলোর দ্বিতীয় প্রধান শিরোনাম। এখানে বলা হয়েছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নিয়ে গুলিবিদ্ধ হওয়া আরও একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
এ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গুলি, সংঘর্ষ ও বিভিন্ন ধরনের সহিংসতায় গত ১৬ জুলাই থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশে কমপক্ষে ৭৫৭ জনের মৃত্যু হলো। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যেশিক্ষার্থী, নারী, শিশু, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ রয়েছেন। তাদের মধ্যে কেউ ঘটনাস্থলে, আবার কেউ চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরে হাসপাতালে মারা গেছেন।
ঢাকার ১৩টি হাসপাতাল, ঢাকার বাইরের ১৪টি হাসপাতাল এবং নিহত ব্যক্তিদের স্বজন ও মরদেহ নিয়ে আসা ব্যক্তিদের সূত্রে সংঘর্ষ-সংঘাতে এসব মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এর মধ্যে ৬৯ জনের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের এক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ১৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত বিক্ষোভ ও পরবর্তী সহিংসতায় কমপক্ষে ৬৫০ জন বাংলাদেশি প্রাণ হারিয়েছেন। ‘বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বিক্ষোভ ও অস্থিরতা বিষয়ে প্রাথমিক বিশ্লেষণ’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদন ১৬ আগস্ট জেনেভা থেকে প্রকাশিত হয়।
৪ঠা আগস্ট রাতেই হাসিনা বুঝতে পারেন সময় শেষ — মানবজমিন পত্রিকার প্রথম পাতার খবর এটি। এতে বলা হয়েছে, ৪ঠা আগস্ট রাতেই বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানতে পারে যে ছাত্র আন্দোলন এমন একপর্যায়ে পৌঁছেছে যা নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব।
কিন্তু শেখ হাসিনা কোনো অবস্থাতেই পদত্যাগে রাজি হচ্ছিলেন না। বরং তিনি আরও কড়া অ্যাকশনের পক্ষে অনড় ছিলেন। পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটছিল। কয়েক ঘণ্টা আগে ঢাকায় ফেরা ছোটবোন শেখ রেহানাও তাকে বোঝাতে ব্যর্থ তখন।
একপর্যায়ে ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে। শুরুতে জয় ছিলেন ক্ষিপ্ত, উত্তেজিত। তার জবাব ছিল ‘আপনারা ব্যর্থ হয়েছেন। আপনাদেরকে কীভাবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল তা ভুলে গেছেন।’
নিরাপত্তাবাহিনীর অনড় ভূমিকায় শেষ পর্যন্ত জয় তার মা শেখ হাসিনার পদত্যাগের পক্ষে সায় দেন এবং শেখ হাসিনা দ্বিতীয় চিন্তা বাদ দিয়ে অবশেষে পদত্যাগে রাজি হন।
এক্ষেত্রে, ওই সময়ের চলমান পরিস্থিতির বিষয়ে শেখ হাসিনাকে বাস্তব অবস্থা থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছিল মর্মে বারবার অভিযোগ উঠেছিলো। এর জন্য বিভিন্ন মাধ্যম নানাজনের প্রতি অভিযোগের আঙ্গুল তুলছে।
কিন্তু মানবজমিন অনুসন্ধান করে পেয়েছে যে শেখ হাসিনাকে ধারাবাহিকভাবে দেশের অবস্থা সম্পর্কে নানাভাবে জানানো হচ্ছিল। তিনি কারও কথাই কানে তুলছিলেন না।
রাষ্ট্রের ৫ খাতে সংস্কার বিএনপিও চায়— দেশ রূপান্তর পত্রিকার দ্বিতীয় প্রধান শিরোনাম এটি। এখানে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রের প্রায় সব খাতেই সংস্কার আনার কথা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা।
তবে তারা নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গণমাধ্যম এ পাঁচটি খাতকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখবেন বলে জানিয়েছেন।
বিএনপিরও চাওয়া, এ খাতগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত সংস্কার করুক। জন্য তারা বর্তমান সরকারকে যৌক্তিক সময় ও পরামর্শ দিয়ে সহায়তাও করতে চায়।
তবে এ খাতগুলোতে সংস্কারের কথা বিএনপি আগেই ঘোষণা করেছিলো। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে ৩১ দফা সংবলিত ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা’ ঘোষণার মধ্যেই এ বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিলো।
হাসিনার বিরুদ্ধে সারা দেশে ৪৭ হত্যা মামলা: ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার ৭ অভিযোগ— নয়া দিগন্ত পত্রিকার প্রথম পাতার একটি শিরোনাম এটি।
এখানে বলা হয়েছে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে তার বিরুদ্ধে সারা দেশে এখন পর্যন্ত ৪৭টি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ৭টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এসব সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলের নেতা, সাবেক মন্ত্রী, পুলিশ কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাদের আসামি করা হয়েছে। মামলাগুলোর প্রায় সবই ভুক্তভোগীদের পরিবারের পক্ষ থেকে করা হয়েছে।
সাবেক চিফ হুইপ ফিরোজ গ্রেপ্তার বিচারপতি মানিক আটক— আজকের পত্রিকার প্রথম পাতার একটি প্রতিবেদন এটি।
এতে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ নেতা ও জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজকে গতকাল রাতে ঢাকার বনানী এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আ স ম ফিরোজ পটুয়াখালী-২ আসন থেকে সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি নবম জাতীয় সংসদের হুইপ ও দশম জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ ছিলেন।
এদিকে সিলেট সীমান্ত দিয়ে ভারতে যাওয়ার সময় সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককেও আটক করা হয় বলে জানিয়েছে বিজিবি।
গতকাল রাত পৌনে ১২টার দিকে বিজিবির ১৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আসাদুন নবী আজকের পত্রিকাকে বলেন, “অবৈধভাবে ভারতে পালানোর সময় দনা সীমান্ত থেকে আমরা তাকে আটক করেছি।”
এস/ভি নিউজ