পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের রুলে বিএনপিকে বক্তব্যের সুযোগ দিল হাইকোর্ট

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল প্রশ্নে জারিকৃত রুল শুনানিতে ইন্টারভেনর হতে বিএনপির আবেদন মঞ্জুর করেছে হাইকোর্ট। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

বিএনপির পক্ষে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সোমবার (২৮ অক্টোবর) হাইকোর্টে এ আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, আওয়ামী লীগসহ তৎকালীন সকল বিরোধী দলের দাবি মেনে নিয়ে ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার প্রবর্তন করে। পঞ্চম জাতীয় সংসদে বিএনপি নেতৃত্বাধীন সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় তখন এটা সংসদে পাস করা সম্ভব হয়নি। সেজন্য ৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পর জনগণের দাবি মেনে নিয়ে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু করে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার যে সরকার ব্যবস্থা চালুর জন্য রাজপথে ছিল, তারাই ক্ষমতায় এসে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে। তবে এই সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে ফেরাতে বিএনপি প্রায় দেড় দশক ধরে রাজপথে গণতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে এই মামলায় বিএনপি ইন্টারভেনর হয়ে আদালতে বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ চাচ্ছে।

আদেশের পর মির্জা ফখরুলের কৌসুলি সিনিয়র অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনী বৈধতার প্রশ্নে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। এই রুলে বিএনপির পক্ষ থেকে কিছু বক্তব্য পেশ করার অনুমতি চাওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি যিনি রিট আবেদনটি করেছেন, সেখানে কেন সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল সেই বিষয়টি রিট আবেদনে আসেনি। এজন্য বিএনপির মহাসচিব ইন্টারভেনর হওয়ার আবেদন করেছেন। আদালত তা মঞ্জুর করেছে।

২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয়। এই সংশোধনীর মাধ্যমে শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির জনক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এই সংশোধনীর দ্বারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। পাশাপাশি অবৈধ ক্ষমতাদখলকারীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান যুক্ত করা হয়।

গত ১৮ আগস্ট সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি রিট করেন। অন্য চার ব্যক্তি হলেন তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজ উদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান।

পরের দিন ১৯ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলের শুনানির জন্য ৩০ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।

পূর্বের খবরনিম্নমুখী দেশের পোশাক রপ্তানি, আয় কমেছে ৩৬ শতাংশ
পরবর্তি খবরইরানকে করুণ পরিণতির হুঁশিয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের