মায়াবী রূপের ভিনদেশি পাখি গ্রেটার ফ্লেমিংগো। পাখিটির দেখা মেলে দক্ষিণ আমেরিকার জলচরে কিংবা ক্যারিবিয়ানের কোনো দ্বীপে। সেই ভিনদেশি পাখির দেখা মিলেছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে। নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে পাখিটি ধরা পড়ে স্থানীয় ধলা মিয়া নামের এক জেলের জালে। দেখতে আকর্ষনীয় হওয়ায় শখ করে বাড়ি নিয়ে যান।
তবে সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) পাখিটি জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার ময়নামতি চরে ছেড়ে দিয়েছেন ওই জেলে।
জানা যায়, স্থানীয় জেলে ধলা মিয়া গত ৮ সেপ্টেম্বর ভোরে করতোয়া নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে ফ্লেমিংগো নামের এ পাখিকে দেখতে পান। বক মনে করে নদী থেকে ধরে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর জানতে পারেন পাখিটি বক নয়, এটি গ্রেটার ফ্লেমিঙ্গো। তখন থেকেই পাখিটিকে পুষতে শুরু করেন। বিষয়টি জানার পর স্থানীয় লালন সরকার নামের এক সাংবাদিক ফ্লেমিংগো পাখিটিকে নিয়ে ফেসবুক পেজে পোস্ট দেন। প্রকাশের মুহূর্তেই পোস্টটি ভাইরাল হলে বিদেশি ওই পাখি দেখতে ধলা মিয়ার বাড়িতে ভিড় জমান নানান বয়সী দর্শনার্থী। এক সপ্তাহ পর পাখিটিকে সোমবার সকালে নদীর ধারে ছেড়ে দেন ধলা মিয়া।
ভিনদেশি ফ্লেমিংগো পাখির উদ্ধারের খবর পেয়ে দেবীগঞ্জে ছুটে যান ওয়ার্ল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার শরিফ আহমেদ। তিনি বলেন, পাখিটি মূলত আফ্রিকা মহাদেশের পাখি। ভারতের উড়িষ্যায় পাখিটির প্রজনন ক্ষেত্র। এখানকার স্থানীয় এক জেলে চাচা পাখিটি উদ্ধার করে কয়েকদিন তার বাড়িতে রেখেছিলেন। পরিচয় না জানার কারণে তিনি পাখিটি ছেড়ে দিয়েছেন। ধারণা করছি যাত্রাকালে বিরতির সময় ময়নামতির চরে দল থেকে বাদ পড়ে যায় পাখিটি। এ কারণেই ওই জেলে পাখিটিকে পেয়ে ধরতে পেরেছিলেন।
পাখিটি সম্পর্কে জানা যায়, এটি গ্রেটার ফ্লেমিঙ্গো নামেই সর্বাধিক পরিচিত। তবে আঞ্চলিকভাবে এটি বাংলায় কানঠুঁটি নামে পরিচিত। এটি সারস আকৃতির পাখি। একসময় এদেশেই থাকতো এই ফ্লেমিঙ্গো পাখিরা। ১৯৬০ সালের দিকে এ অঞ্চলে বিচরণ ছিল ফ্লেমিঙ্গো পাখিদের। ১৯৭০ সালের দিকে সর্বশেষ ভোলা জেলার মনপূরা দ্বীপে দেখা গেছে। কালের বিবর্তনে এখন পরিযায়ী পাখি হিসেবে দেখা হয় এ পাখিটিকে। বর্তমানে আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়ার কিছু অঞ্চল, স্পেন, আলবেনিয়া, তুরস্ক, গ্রিস, সাইপ্রাস, পর্তুগাল, ইতালি ও ফ্রান্সের কিছু এলাকায় এদের ব্যাপক বিচরণ রয়েছে।
এস/ভি নিউজ