নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী আসনের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য পাঁচ দেশ-যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া ও যুক্তরাজ্য। তবে গত কয়েক বছর ধরেই এর অংশ হতে বিশ্ব সংস্থাগুলোকে চাপ দিয়ে আসছিল ভারত। এবার ভারতকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হতে সমর্থন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

এ ব্যাপারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সমর্থন জানিয়ে বলেছেন, সংশোধিত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে (ইউএনএসসি) ভারতের স্থায়ী সদস্যপদসহ দেশটির গুরুত্বপূর্ণ কণ্ঠস্বর প্রতিফলিত করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাপী সংস্থাগুলির সংস্কারের উদ্যোগকে সমর্থন করে।

রোববার ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা এবং অস্ট্রেলিয়ার অ্যান্টনি আলবেনিজ উপস্থিত থাকা কোয়াড লিডারস সামিটে প্রেসিডেন্ট বাইডেন এই বিবৃতি দিয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বিবৃতির পর কোয়াড নেতারা সদস্যপদ স্থায়ী এবং অস্থায়ী বিভাগে সম্প্রসারণের মাধ্যমে ইউএনএসসি সংস্কারে সমর্থন দিয়েছেন। এ ব্যাপারে একটি যৌথ বিবৃতিতে নেতারা বলেছেন, ‘ভারত-মার্কিন অংশীদারিত্ব বিশ্বের জন্য একটি পরিচ্ছন্ন, অন্তর্ভুক্তিমূলক, সুরক্ষিত এবং আরও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার প্রচেষ্টার সাফল্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’

এ সময় প্রেসিডেন্ট বাইডেন ভারতের নেতৃত্ব, বিশেষ করে জি-২০ এবং গ্লোবাল সাউথে প্রধানমন্ত্রী মোদির ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং সাম্প্রতিক সময়ে মোদির পোল্যান্ড ও ইউক্রেন সফরের কথা তুলে ধরেন। ইউএনএসসি-এর স্থায়ী সদস্য হিসেবে ভারতের সম্ভাব্য অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে আলোচনা বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতাগুলিকে প্রতিফলিত করার জন্য বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলির সংস্কারের বিষয়ে কথা বলেন। যদিও ভারত তার বৃহৎ জনসংখ্যা, প্রসারিত অর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা ও কূটনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা নিয়ে দীর্ঘকাল ধরে এই ধরনের সংস্কারের পক্ষে কথা বলে আসছে।

কোয়াড নেতাদের যৌথ বিবৃতিতে, ‘মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক রুটসহ নৌচলাচলের স্বাধীনতা এবং বাণিজ্য সুরক্ষার জন্য নেতারা তাদের সমর্থন পুনঃনিশ্চিত করেছেন। যেখানে ভারত ২০২৫ সালে সম্মিলিত টাস্ক ফোর্স ১৫০-এর সহ-নেতৃত্ব গ্রহণ করবে। এবং সমুদ্রপথগুলিকে সুরক্ষিত করতে সম্মিলিত সামুদ্রিক বাহিনীর সাথে কাজ করবে বিশেষ করে আরব সাগরে।’

কোয়াড সম্মেলনের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি, ‘মুক্ত, উন্মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিক’ এর গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদি বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য সুরক্ষা, উদীয়মান প্রযুক্তি এবং জলবায়ু পরিবর্তনে সহযোগিতাসহ বেশ কয়েকটি উদ্যোগ তুলে ধরেন। তিনি কোয়াডকে ‘বৈশ্বিক ভালোর জন্য একটি শক্তি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যা সকলের সুবিধার জন্য সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এর বাইরে বাইডেন প্রশাসন ভারতে পরিচ্ছন্ন শক্তি প্রকল্পের জন্য ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংক ফর রিকনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইবিআরডি) এর মাধ্যমে নতুন বহুপাক্ষিক অর্থায়নে ১ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। যা আগামীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত প্রযুক্তি এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় অগ্রগতি বইয়ে আনবে। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি খাতে দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক জোরদার করার ব্যাপারেও একমত হয়েছে মোদি-বাইডেন।

পূর্বের খবরতিন বিলিয়ন ডলার ঋণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে আসছে আইএমএফ মিশন
পরবর্তি খবরবাংলাদেশকে ‘ধবল ধোলাই’ করে বিদায় করলো ভারত