বর্তমান বিশ্বে শিল্প ও ব্যবসা প্রশাসনে কোয়ালিটির গুরুত্ব অপরিসীম। সর্বস্তরে কোয়ালিটি চর্চার মাধ্যমেই একটি দেশ উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছাতে পারে। বাংলাদেশ সরকারের ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নেও কোয়ালিটি ব্যবস্থাপনা ব্যবসায়িক সফলতার গুরুত্বপূর্ণ দিক হিসাবে বিবেচিত হতে পারে। এ লক্ষ্যে আগামী ১ থেকে ৩ ডিসেম্বর ঢাকায় সোনারগাঁও হোটেল ও ইউনিভারসিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক এ শুরু হতে যাচ্ছে ৪৫তম আন্তর্জাতিক কোয়ালিটি কন্ট্রোল সার্কেল সম্মেলন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিনদিনব্যাপী এই সম্মেলনের উদ্বোধন করতে পারেন। গতকাল রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন এ তথ্য জানায় আয়োজক সংগঠন বাংলাদেশ সোসাইটি ফর টোটাল কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট(বিএসটিকিউএম)।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের প্রেসিডেন্ট কে.এ.এম খাইরুল বাশার জানান, এই সম্মেলন বিদেশি ৪ হাজার এবং দেশের এক হাজার প্রতিনিধি অংশগ্রহনের কথা ছিল। কিন্তু মহামারি করোনা প্রাদূর্ভাবের কারনে এতে প্রায় ২ হাজার প্রতিনিধি অংশ নেবেন এবং তারা ২৬৯টি কেসস্টাডি উপস্থাপন করবেন। সম্মেলনে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন কোয়ালিটি বিষয়ে বিশ্বের শীর্ষ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড: নরিয়াকি কানো। এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘আনলকিং ইমাজিনেশন থ্রু কিউসিসি’। তিনি বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কোয়ালিটি উন্নয়নের কৌশল হিসাবে জাপানে প্রথম ১৯৬২ সালে “কোয়ালিটি কান্ট্রোল সার্কেল” কার্যক্রম শুরু হয়। পর্যুদস্ত জাপানিজ অর্থনীতি উন্নয়নে কোয়ালিটি কন্ট্রোল সার্কেলের অবদান অপরিসীম। আত্মউন্নয়ন ও পারস্পরিক উন্নয়ন কোয়ালিটি সার্কেল কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ৭২টি দেশে এ কার্যক্রম চলছে। এ বিষয়ে প্রতিবছর একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে এটিই বিশ্বের সর্ববৃহৎ ফোরাম ও সম্মেলন। করোনার কারনে এবার স্বশরীরে উপস্থিত ছাড়াও ভাচ্যুয়াল উপস্থাপনায় কেইস স্টাডিসমূহ উপস্থাপন করা হবে।
সম্মেলনে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শেখ নিজামুদ্দিন জানান, সম্মেলন বাংলাদেশসহ চায়না, ভারত, জাপান, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, মরিশাসসহ সদস্যভুক্ত ১৪টি দেশ এবং প্রথম রাষ্ট্র হিসেবে গাম্বিয়া থেকে ৫টি প্রতিনিধিদল স্বশরীরে উপস্থিত থাকবেন। বাংলাদেশ সোসাইটি ফর টোটাল কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট(বিএসটিকিউএম)’ এ কনভেনশনে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করে। ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ সোসাইটি ফর টোটাল কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট এই কনভেনশনের সদস্য পদ লাভ করে । তিনি বলেন, এই সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীগণ কোয়ালিটি ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে মত বিনিময় ও কৌশলগুলি সম্পর্কে হালনাগাদ ধারণা লাভ করেন। বিগত বছরে কোয়ালিটি সার্কেলগুলো কোথায় কি ধরণের নতুন ধ্যান-ধারণার আবিষ্কার ও বাস্তবায়নের মাধ্যেমে কিভাবে মান উন্নত করেছে সে বিষয়ে নির্বাচিত কেইস স্টাডিসমূহ উপস্থাপন করা হয়। প্রতি বছরই এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। আগামী বছর এই সম্মেলন হবে ভারতে হায়দ্রাবাদে। ২০১৯ সালে জাপানের টোকিওতে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ থেকে এ সম্মেলনে ৩৩ জন প্রতিনিধি অংশ নেয় এবং সেখানে তিনটি কেইস স্টাডি উপস্থাপন করা হয়। মূল্যায়নে এই তিনটি কেইস স্টাডিই গোল্ড শ্রেনীতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের ভাইস প্রেসিডেন্ট শামসুল হুদা, ওয়াহিদুজ্জামান বাবর, কোষাধক্ষ্য এম এম বাবর ও ইঞ্জিনিয়ার ওয়ালিউর রহমান প্রমূখ।