ট্রাম্প, হ্যারিসের তুমুল প্রচারণার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে আড়াই কোটি আগাম ভোট

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর মাত্র ১১ দিন বাকি। দোদুল্যমান হিসেবে পরিচিত অঙ্গরাজ্যগুলোর ভোটের ফলাফল এ নির্বাচনের বিজয়ী বেছে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মত বিশ্লেষকদের। তাই মতামত জরিপে এগিয়ে থাকা দুই প্রার্থী ডেমোক্র্যাট কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান ডনাল্ড ট্রাম্প এসব অঙ্গরাজ্যে তুমুল প্রচারণা চালাচ্ছেন।

জনমত জরিপে জাতীয়ভাবে ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে থাকলেও ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কারণে হ্যারিসের জনপ্রিয়তায় কিছুটা ভাটার টান তৈরি হচ্ছে, বিভিন্ন জরিপে এমন আভাস পাওয়া যাচ্ছে। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে ভোটারটা নতুন নীতির জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠছেন।

এ পরিস্থিতিতে হ্যারিস বাইডেনের সঙ্গে নিজের একটা একটা দূরত্ব তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন বলে রয়টার্স জানিয়েছে।

দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত পেনসিলভ্যানিয়ায় প্রচারণাকালে বুধবার হ্যারিস জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের চেয়ে তার প্রশাসন আলাদা হবে।

পেনসিলভ্যানিয়ায় চেষ্টার শহরের টাউন হলের সমাবেশে হ্যারিস বলেন, “আমার প্রশাসনের বাইডেন প্রশাসনের ধারাবাহিকতা হবে না। আমি এই ক্ষেত্রে আমার নিজস্ব ধারণা এবং আমার নিজস্ব অভিজ্ঞতার প্রয়োগ ঘটাবো। আমি বিভিন্ন বিষয়ে নতুন প্রজন্মের নেতৃত্বের প্রতিনিধিত্ব করি আর আমাদের নতুন দৃষ্টিভঙ্গী গ্রহণ করতে হবে বলে বিশ্বাস করি আমি।”

তবে অঙ্গরাজ্যটির বিভিন্ন স্থানে চালানো প্রচারণার সময় তিনি অধিকাংশ সময়ই বাইডেনের নীতি থেকে কীভাবে এবং কতোট আলাদা হবেন, এ ধরনের প্রশ্নগুলো এড়িয়ে গেছেন।

কাকে ভোট দেবেন যারা এখনও সে সিদ্ধান্ত নেননি, এই ইস্যুটি নিয়ে তাদের মধ্যে হ্যারিসের প্রতি সমর্থন কমতে দেখা যাচ্ছে। হ্যারিস তাদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করলেও এ ধরনের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে কয়েক শতাংশ ভোটও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।

টাউন হলের সমাবেশে উপস্থিতদের বেশ কয়েকটি প্রশ্নের জবাবে কমলা হ্যারিস নিত্য পণ্যের উচ্চমূল্য মোকাবেলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ বন্ধ করার সময় এসেছে। তখন তিনি ট্রাম্পকে ‘ফ্যাসিবাদী’ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ‘ভবিষ্যৎ ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি’ বলে অভিহিত করেন।

ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকশন ল্যাবের ট্র্যাকিং ডেটা অনুসারে, প্রায় আড়াই কোটি ভোটার ইতিমধ্যে ব্যক্তিগতভাবে আগাম ভোট অথবা মেল-ইন ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিয়ে দিয়েছেন।

চলতি সপ্তাহে দোদুল্যমান নর্থ ক্যারোলাইনা ও জর্জিয়াসহ বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে আগাম ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার প্রথমদিনেই রেকর্ড ভোট পড়েছে।

বুধবার রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প আরেক গুরুত্বপূর্ণ দোদুল্যমান রাজ্য জর্জিয়ার জেবুলন ও ডুলুথ শহরে প্রচারণা চালিয়েছেন।

জেবুলনে ধর্মীয় আবহের ‘ব্যালট অ্যান্ড বিলিভার্স’ অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, “জর্জিয়ায় ভোট রেকর্ড পর্যায়ে রয়েছে। আসলে প্রতিটি রাজ্যেই ভোট রেকর্ড পর্যায়ে রয়েছে। আমরা খুব ভালো করছি আর আশা করি আমরা আমাদের দেশকে ঠিক করে ফেলতে পারবো।”

জেবুলনে ট্রাম্প বলেন, ‘দুঃখজনক’ যে একজন রাজনীতিক প্রার্থী হিসেবে তার সময় শেষ হয়ে আসছে। ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে জয়ী হলে ট্রাম্প (৭৮) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় ও শেষ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করবেন।

ট্রাম্প বলেন, “আমরা নয় বছর ধরে নির্বাচনের জন্য লড়ছি। আর এখন মাত্র ১২ দিন হাতে আছে।”

২০১৫ সাল থেকে নির্বাচনের প্রচারণায় নামা ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের টানা তিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী মনোনীত হয়েছেন। ২০১৬ থেকে ২০২০ পর্যন্ত এক মেয়াদে দেশটির প্রেসিডেন্ট থাকার পর পরবর্তী নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট বাইডেনের কাছে হেরে যান তিনি।

এবারের নির্বাচনে ফের রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি। এবার তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও জরিপ সংস্থা ইপসোসের সর্বশেষ জনমত জরিপ অনুযায়ী, জাতীয়ভাবে হ্যারিস সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চেয়ে ৩ শতাংশ ব্যবধানে এগিয়ে আছেন। হ্যারিসের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন ৪৬ শতাংশ ভোটার আর ট্রাম্পের পক্ষে ৪৩ শতাংশ।

এস/ভি নিউজ

পূর্বের খবরএক দশকের অপেক্ষা ঘুচিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক বললেন, ‘এই জয় স্পেশাল’
পরবর্তি খবরবিজ্ঞাপন ও সৃজনশীল যোগাযোগে ১৬ পুরস্কার পেল বিকাশ