চিনেছি প্রতুলকে

 

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে বহু কিছুর সাথে পরিচয় ঘটে। এর মধ্যে চিনেছি প্রতুলকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে উদীচীর প্রোগ্রামে প্রথম প্রতুলের গান সরাসরি শুনি। মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনেছিলাম “লাল, কমলা, হলদে, সবুজ, আসমানী, নীল, বেগুনী”, “ডিংগা ভাসাও”, “আলু বেচো ছোলা বেচো”। তারপর নিজের গলায় তুলে নিয়েছি সেইসব গান। প্রতুলের বহু গান আমি গাইতে পারি।
তার মধ্যে “ডিংগা ভাসাও” কিংবা “আলু বেচো ছোলা বেচো” কতবার গেয়েছি, এখনও গাই। সামনেও গাইবো।
প্রতুলের রাজনৈতিক অবস্থান যা-ই থাকুক, সেগুলো তার গান গাওয়া নিয়ে আমার অবস্থান পরিবর্তন করেনি, হবেও না।
যখন রাজনৈতিকভাবে গড়ে উঠছি, তখনই আমরা সদলবলে গেয়েছি—
“হাট মিটিংয়ে চোঙা ফুঁকেছি,
গেট মিটিংয়ে গলা ভেঙেছি,
চিনেছি শহর, গ্রাম,
স্লোগান দিতে গিয়ে আমি সবার সাথে আমার দাবি প্রকাশ্যে তুললাম…”
স্লোগান দিতে গিয়ে আমরা চিনতে শিখি। এই বাক্যটাকে ভিত্তি ধরে এগিয়েছি। এই গানের লাইনটা রাজনীতিতে আমাকে শক্তি দিয়েছে। দুশমন চিনতে সহযোগিতা করেছে।
“সব মরণ নয় সমান”— এমন করে কয়জন বলতে পারে?
“ডিংগা ভাসাও” গানটা আমি ব্রাজিলে গিয়ে শুনিয়েছিলাম। তারপর অনুরোধ এসেছিলো ইংরেজিতে অনুবাদ করে শোনানোর। আমি দ্রুতই ইংরেজি করে তাদের বলেছিলাম। আমার এক প্যালেস্টাইনের বন্ধু বলেছিলো, “উনি তো দার্শনিক।” বন্ধুরা বলেছিলো, “লাল সূর্য উঠবেই।” এভাবে প্রতুলকে সাথে করে নিয়ে যাই সর্বত্র..
বহু বছর ধরে ছাত্র ইউনিয়নের প্রকাশনা কিংবা বাংলাদেশের ক্যাম্পাসের দেয়ালগুলিতে আমরা লিখে দিয়েছিলাম—
“বন্ধু, তোমার লাল টুকটুকে স্বপ্ন বেচোনা।”
আমরা এই বাক্যটাকে মনে রেখে রাজনীতিতে এগিয়েছি। আমরা বামপন্থী রাজনীতিকে আকড়ে ধরেই এগুতে চেয়েছি। সামনেও এগুতে চাই।
শুধু এটাই মনে হয়েছে— আমাদের যেতে হবে। দূরে, বহুদূরে। এই যে কঠিন রাস্তা, পাড়ি আমাদের দিতেই হবে। প্রতুল কিংবা আরও অনেকে সেখানে আমাদের প্রেরণা যোগাবে।
শুধু ভেবেছি একজন মানুষ, বাদ্যযন্ত্র ছাড়া, গানটাকে যেভাবে গেয়েছে, সবসময় মনে হয়েছিলো গান নয়, কথা বলতে চেয়েছে প্রতুল। গানের সেই কথাগুলো বলে যেতে হবে আমাদের।

লাকি আখতারের ফেসবুক খেকে

পূর্বের খবরমেট্রোরেলে একদিনে ৪ লক্ষাধিক যাত্রী পরিবহনের রেকর্ড
পরবর্তি খবরভ্যালেন্টাইন’স ডে : বিশ্ব ভালোবাসা দিবস