গাজা উপত্যকার মালিকানা নিয়ে নেবে যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের অন্য কোথাও পুনর্বাসিত করার পর যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার মালিকানা দখল করে সেটিকে অর্থনৈতিকভাবে উন্নত করবে।

মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র সফররত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে সঙ্গে নিয়ে করা এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প তার এই আশ্চর্য পরিকল্পনা তুলে ধরেন। তার এই ঘোষণায় ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে চলা সংঘাত নিয়ে কয়েক দশক ধরে চলে আসা যুক্তরাষ্ট্রের নীতি পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

এর আগে একইদিন সকালে ট্রাম্প গাজার ফিলিস্তিনিদের স্থায়ীভাবে প্রতিবেশী দেশগুলোতে পুনর্বাসনের প্রস্তাব দিয়ে সবাইকে স্তম্ভিত করে দেন।ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে ভঙ্গুর একটি যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্ব পালিত হচ্ছে। এই ছিটমহলকে ‘ধ্বংস হয়ে যাওয়া এলাকা’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

রয়টার্স লিখেছে, ট্রাম্প আশা করতে পারেন মিত্র এবং শত্রুরা একইরকমভাবে গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো দখলদারিত্বের প্রবল বিরোধিতা করবে।

ফিলিস্তিনের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি অংশ নিলে তা ওয়াশিংটন ও বিশ্বের অধিকাংশ দেশ দীর্ঘদিন ধরে যে নীতি অনুসরণ করে আসছে তার বিপরীত হবে। ওই নীতিতে গাজাকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অংশ বলে ধরা হয়, ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরও যার অন্তর্ভুক্ত।

সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজা ভূখণ্ডের দখল নেবে আর আমরা এটিকে নিয়ে একটি কাজও করবো। আমরা এটির মালিক হয়ে সেখানে থাকা বিপজ্জনক অবিস্ফোরিত সব বোমা ও অন্যান্য অস্ত্র ধ্বংস করার দায়িত্বপালন করবো। যদি এটা প্রয়োজনীয় হয়, আমরা তা করবো, আমরা খণ্ডটি দখল করতে যাচ্ছি, আমরা সেটির উন্নয়ন ঘটাতে যাচ্ছি, হাজার হাজার চাকরি তৈরি হবে আর এটি এমন কিছু হবে যার জন্য পুরো মধ্যপ্রাচ্য অত্যন্ত গর্বিত হতে পারে।

তিনি বলেন, আমি একটি দীর্ঘমেয়াদি মালিকানার অবস্থান দেখতে পাচ্ছি আর এটি মধ্যপ্রাচ্যের ওই অংশে ব্যাপক স্থিতিশীলতা নিয়ে আসবে। আমি এ ধারণা নিয়ে ওই অঞ্চলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি আর তারা এতে সমর্থন জানিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘দখলকৃত’ গাজায় কারা বসবাস করবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটি বিশ্বের মানুষের বাড়িতে পরিণত হতে পারে। ফিলিস্তিনের ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী এই সংকীর্ণ ভূখণ্ডটির ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরা’ হয়ে উঠার সম্ভাবনা আছে বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প।

কীভাবে এবং কোন কর্তৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র ২৩ লাখ ফিলিস্তিনির আবাস গাজা দখল করে এটি অধিকার করতে পারে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের সরাসরি কোনো জবাব দেননি ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্র গাজা উপত্যকায় সেনা পাঠাবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, যদি প্রয়োজন হয়, আমরা তা করবো।

নেতানিয়াহু ট্রাম্পের এই প্রস্তাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় নিজেকে জড়াননি। শুধু একটি ‘নতুন পন্থায়’ চেষ্টা করার জন্য ট্রাম্পের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ট্রাম্প নতুন ধারণা নিয়ে পুরোপুরি অন্যভাবে চিন্তা করছেন। তিনি প্রচলিত চিন্তাভাবনাকে থেকে বের হওয়ার ইচ্ছা প্রদর্শন করছেন। আমরা যেমনটা আলোচনা করেছি, মিস্টার প্রেসিডেন্ট, আমাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে এবং আমাদের অঞ্চলে শান্তি আনতে, আমাদের কাজ শেষ করতে হবে। ইসরায়েলকে নিশ্চিত করতে হবে যে- গাজা আর কখনও ইসরায়েলের জন্য হুমকি হয়ে উঠবে না।

সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি

পূর্বের খবর‘যারা বিদেশ পালিয়েছে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে’
পরবর্তি খবর৪০ কোটি পেরিয়েছে ‘দুষ্টু কোকিল’, দেশীয় সিনেমার গানে রেকর্ড