বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও শাসনব্যবস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত চলছে বলে মন্তব্য করেছে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের চার দিনের সফর শেষ করার পর দূতাবাস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই মন্তব্য করেছে। একই সঙ্গে বিজ্ঞপ্তিতে এই সফরকে ঐতিহাসিক বলেও অভিহিত করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জানায়, বাংলাদেশের অর্থনীতি, গণতন্ত্র এবং শ্রমিকদের সমর্থনে আসা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের সফর শেষ হলো মঙ্গলবার।
প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বিশেষ প্রতিনিধি কেলি এম ফে রদ্রিগেজ এবং শ্রমবিষয়ক দপ্তরের ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি থিয়া লি। এই সফরে তাদের সঙ্গে ছিলেন ইউএসএআইডির প্রতিনিধি, আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান ব্র্যান্ডগুলোর ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব এবং আন্তর্জাতিক শ্রম বিশেষজ্ঞ ইউএনআই গ্লোবাল ইউনিয়নের মহাসচিব ক্রিস্টি হফম্যান এবং ওয়ার্কার রাইটস কনসোর্টিয়ামের নির্বাহী পরিচালক স্কট নোভা।
এই সফরে অংশগ্রহণকারী যুক্তরাষ্ট্রের ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে ছিল গ্যাপ ইনকরপোরেটেড, পিভিএইচ করপোরেশন এবং ভিএফ করপোরেশন, যারা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত (আরএমজি) থেকে প্রতিবছর আনুমানিক ১৮০ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য ক্রয় করে।
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও শাসন ব্যবস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই মুহূর্তে শ্রম অধিকার চর্চার দীর্ঘস্থায়ী চ্যালেঞ্জগুলো সমাধান করা জাতীয় অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস আরো জানায়, যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক অর্থনীতিতে শ্রমিকদের মঙ্গল নিশ্চিত করার ব্যাপারে সরকার, ক্রেতা, নিয়োগদাতা, নিয়ন্ত্রক এবং শ্রম ইউনিয়নগুলোর যৌথ দায়িত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করে। এর মধ্যে রয়েছে সুরক্ষিত ও সম্মানজনক কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা এবং বিশেষভাবে তৈরি পোশাক খাতে সমিতি গঠনের স্বাধীনতা ও যৌথ দর-কষাকষির অধিকার শক্তিশালী করার মাধ্যমে শ্রমিক অধিকারের উন্নয়ন।
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শ্রম সংস্কার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের শীর্ষ অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, বাংলাদেশের শ্রমিক এবং তাদের পরিবারের উন্নতি নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে এমন শিল্প খাতের কার্যক্রম স্থিতিশীল কর্মসংস্থান, মানসম্পন্ন কর্মপরিবেশ এবং জীবিকা নির্বাহের উপযোগী মজুরি নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জানায়, ‘যুক্তরাষ্ট্র গত ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। আমরা এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে বাংলাদেশের জনগণের পাশে থাকার সুযোগ পেয়ে কৃতজ্ঞ এবং ঢাকায় একত্রিত হয়ে স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক ট্রেড ইউনিয়ন, বাংলাদেশের শ্রমিক এবং তাদের নিয়োগকর্তা প্রতিষ্ঠানের প্রতি আমাদের যৌথ প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করতে পেরে গর্বিত।