
সারা দেশের প্রায় ৭০০টি জেলার মধ্যে করোনাভাইরাসের হটস্পট হিসেবে ১৭০টি জেলাকে চিহ্নিত করল কেন্দ্র। এই জেলাগুলিকে ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে জানানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, করোনার সংক্রমণ ওই এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে বিশেষ পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ ছাড়া ২০৭ টি জেলা চিহ্নিত হয়েছে সম্ভাব্য হটস্পট বা ‘হোয়াইট জোন’ হিসেবে। বাকি ৩৫৩টি জেলায় করোনার সংক্রমণ প্রায় শূন্য, অর্থাৎ ‘গ্রিন জোন’।
কেন্দ্রের তরফে নির্দিষ্ট করে জেলাগুলির তালিকা না দেওয়া হলেও জানানো হয়েছে, কলকাতা-সহ দেশের ছ’টি মেট্রো-সিটি বা মহানগরই করোনার হটস্পট। আর সারা দেশের এই হটস্পটগুলিতেই রয়েছে মোট আক্রান্তের ৮০ শতাংশ। আবার রাজ্যগুলির ক্ষেত্রেও একই ভাবে ৮০ শতাংশ আক্রান্ত এই হটস্পটগুলিতেই রয়েছেন। এই ১৭০টি হটস্পটের মধ্যেও আবার ১২৩টি জেলাকে ‘ব্যাপক সংক্রমিত’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই ১২৩ জেলার মধ্যে রয়েছে রাজধানী দিল্লির সব ক’টি (৯) জেলা, মুম্বই, কলকাতা, বেঙ্গালুরু আর্বান, হায়দরাবাদ, চেন্নাই, জয়পুর এবং আগরার বেশ কিছু এলাকা। তবে এর বাইরেও যে সব এলাকায় দ্রুত হারে সংক্রমণ ছড়াবে বা আক্রান্তের সংখ্যা চার দিনের কম সময়ে দ্বিগুণ হয়ে যাবে, সেগুলিও হটস্পটের আওতায় চলে আসবে।
বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সচিব লব আগরওয়াল জানিয়েছেন, এই হটস্পট বা রেড জোনগুলিতে আরও ২৮ দিন সমস্ত রোগী কোভিড নেগেটিভ না হওয়া পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ জারি থাকবে। এই এলাকাগুলিতে বিশেষ নজরদারি চালানো হবে এবং ব্যাপক হারে কোভিড-১৯ এর পরীক্ষা করা হবে। শুধু তাই নয়, বাড়ি বাড়ি ঘুরে এই সব এলাকায় কারা ইনফ্লুয়েঞ্জা, শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছেন, সেই সব তথ্যও সংগ্রহ করা হবে। গ্রামাঞ্চলে করোনার কেন্দ্রস্থল থেকে তিন কিলোমিটার ব্যাসার্ধ এলাকাকে রেড জোন হিসেবে ধরা হবে। আর মোট ৭ কিলোমিটার ব্যাসার্ধ এলাকাকে ধরা হবে বাফার জোন বা অরেঞ্জ জোন।
লব আগরওয়াল জানিয়েছেন, করোনার কেন্দ্রস্থল নির্ধারণ করবেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা। তার পর আক্রান্ত রোগীদের সংস্পর্শে আসা মানুষজনকে চিহ্নিত করা থেকে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখার ভারও বর্তেছে জেলা প্রশাসনের উপরেই। স্বাস্থ্যসচিব বলেন, ‘‘রাজ্য ও জেলা প্রশাসনই এলাকা সম্পর্কে ভাল জানতে ও বুঝতে পারবেন। সেটা কেন্দ্র পারবে না।’’
তবে এই হটস্পটের সংখ্যা যে বাড়তে বা কমতে পারে, তাও জানিয়েছেন লব আগরওয়াল। তিনি বলেন, ‘‘সংক্রমণের হার কেমন, আক্রান্তের সংখ্যা কী হারে বাড়ছে বা কতটা নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে— এই সমস্ত তথ্য দেওয়ার জন্য রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে বলা হয়েছে। সেই তথ্য অনুযায়ী এই হটস্পটের তালিকা পরিবর্তন হতে পারে। এটা একটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া।’’