আসছে বছরের প্রথম দিন ১ জানুয়ারি থেকে পাবলিক বা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা গৃহঋণ পাবেন। আর তা পাবেন ৯ শতাংশ সরল সুদে অর্থাৎ এক অঙ্কের সুদে। অবশ্য এ সুবিধা সরকারের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্যও প্রযোজ্য। ঋণগ্রহীতা ব্যাংক রেটের সমহারে (৫ শতাংশের কম বা বেশি হতে পারে) সুদ পরিশোধ করবেন। সুদের বাকি অংশ সরকার ভর্তুকি দেবে। সরকার সময়ে সময়ে সুদের হার পরিবর্তন করতে পারবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা গ্রেডভেদে সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ এবং সর্বনিম্ন ২০ লাখ টাকা গৃহনির্মাণ ঋণ নিতে পারবেন। গত বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ এ বিষয়ে পৃথক দুটি পরিপত্র জারি করেছে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিপত্রে বলা হয়েছে, জাতীয় বেতন স্কেলে পঞ্চম গ্রেড ও তদূর্ধ্ব শিক্ষক-কর্মচারীরা, যাঁদের মূল বেতন ৪৩ হাজার বা এর চেয়ে বেশি, তাঁরা ঢাকাসহ সব সিটি করপোরেশন ও বিভাগীয় সদরে ৭৫ লাখ টাকা ঋণ পাবেন। জেলা সদরে ৬০ লাখ এবং অন্য এলাকার জন্য ৫০ লাখ টাকা ঋণ নিতে পারবেন। ষষ্ঠ থেকে নবম গ্রেডভুক্তরা ঢাকাসহ বিভাগীয় সদর এলাকায় ৬৫ লাখ, জেলা সদরে ৫৫ লাখ এবং অন্য এলাকায় ৪৫ লাখ টাকা ঋণ পাবেন। দশম থেকে ১৩তম গ্রেডভুক্তরা ঢাকাসহ বিভাগীয় সদরের জন্য ৫৫ লাখ, জেলা সদরে ৪০ লাখ এবং অন্য এলাকায় ৩০ লাখ টাকা ঋণ পাবেন। ১৪তম থেকে ১৭তম গ্রেডভুক্তরা ঢাকাসহ বিভাগীয় সদরে ৪০ লাখ, জেলা সদরে ৩০ লাখ এবং অন্য এলাকায় ২৫ লাখ টাকা ঋণ পাবেন। ১৮তম থেকে ২০তম গ্রেডভুক্তরা ঢাকাসহ বিভাগীয় সদরে ৩০ লাখ, জেলা সদরে ২৫ লাখ এবং অন্য এলাকায় ২০ লাখ টাকা ঋণ পাবেন। ঋণ পরিশোধের মেয়াদকাল হবে সর্বোচ্চ ২০ বছর।
ঋণগ্রহীতাকে কোনো ধরনের ফি দিতে হবে না। তবে স্বত্ব রিপোর্টের জন্য সরকারি প্লট বা ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ তিন হাজার টাকা এবং বেসরকারি প্লট বা ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ চার হাজার টাকা বাস্তবায়নকারী সংস্থাকে দিতে হবে।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, গৃহ নির্মাণ ঋণের জন্য আবেদনের সর্বশেষ বয়সসীমা হবে অবসরোত্তর ছুটিতে যাওয়ার এক বছর আগ পর্যন্ত। আর সরকার প্রদত্ত সুদ ভর্তুকি অবসরোত্তর ছুটি ভোগের সর্বশেষ দিন পর্যন্ত পাবেন। তবে কোনো শিক্ষক-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে এবং অভিযোগের তদন্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ঋণ পাবেন না। দুর্নীতির মামলার ক্ষেত্রে চার্জশিট দাখিল হলে মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ঋণ পাবেন না। এ ছাড়া চুক্তিভিত্তিক, খণ্ডকালীন ও অস্থায়ী ভিত্তিতে নিযুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা গৃহঋণ পাবেন না। কোনো শিক্ষক-কর্মচারী স্বেচ্ছায় চাকরি ত্যাগ করলে অথবা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান কোনো শিক্ষক-কর্মচারীকে বাধ্যতামূলক অবসর দিলে, চাকরি থেকে বরখাস্ত, চাকরিচ্যুত করলে আদেশ জারির তারিখ থেকে ঋণের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য সুদ বাবদ সরকার প্রদত্ত ভর্তুকি সুবিধা প্রত্যাহার করা হবে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহ নির্মাণ ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি তফসিলি ব্যাংক এবং বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন বাস্তবায়নকারী সংস্থা হিসেবে কাজ করবে। সরকার অন্য যেকোনো বাণিজ্যিক ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে বাস্তবায়নকারী সংস্থা হিসেবে নিয়োগ করতে পারবে। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য শুধু একটি বাস্তবায়নকারী সংস্থা নির্ধারিত থাকবে।