ভারতের উত্তর প্রদেশের ঝাঁসির একটি হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ১০ নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছে আরও ১৬ শিশু।
শুক্রবার রাত পৌনে ১১টার দিকে মহারানি লক্ষ্মী বাই মেডিকেল কলেজের নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (এনআইসিইউ) আগুন লাগে বলে জানিয়েছেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (ডিএম) অবিনাশ কুমার।
উপ-মুখ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠকের ধারণা, অক্সিজেন কনসেনট্রেটরের ভিতরে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগতে পারে।
নিহত ১০ নবজাতকের মধ্যে সাতজনের পরিচয় পাওয়া গেছে জানিয়ে এক কর্মকর্তা বলেন, বাকি তিনজনকে শনাক্ত করতে প্রয়োজনে ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে।
ফুটেজে হাসপাতালের বাইরে আতঙ্কিত রোগী ও তাদের তত্ত্বাবধায়কদের দেখা গেছে। ভেতরে বেশ কয়েকটি পুড়ে যাওয়া চিকিৎসা সরঞ্জাম রয়েছে।
ঝাঁসির সিনিয়র পুলিশ সুপার (এসএসপি) সুধা সিং শনিবার সকালে বলেছেন, “আহত ১৬ শিশুকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং তাদের বাঁচানোর চেষ্টা চলছে। তাদের জন্য সব চিকিৎসকের পাশাপাশি পর্যাপ্ত চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে।”
এনডিটিভি লিখেছে, হাসপাতালের ফায়ার অ্যালার্ম কাজ করেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। সেখানে জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের অভাব রয়েছে।
পাঠক বলেন, “তদন্ত প্রতিবেদন আসার পর কীভাবে এবং কেন এই ঘটনা ঘটল, সে বিষয়ে আমরা কিছু বলতে পারব।”
আগুনের ঘটনায় স্বাস্থ্য বিভাগ, পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের আলাদা আলাদা তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ নিহতদের পরিবারকে ৫ লাখ রুপি আর্থিক সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন। যারা গুরুতর জখম হয়েছে, তারা পাবেন ৫০ হাজার রুপি করে।
মুখ্যমন্ত্রী ঝাঁসির ডিভিশনাল কমিশনার এবং ডিআইজি জেনারেলকে ১২ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন।
এ ঘটনায় দেশটির রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শোক প্রকাশ করেছেন।
এক বার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেছেন, “উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসির মহারানি লক্ষ্মী বাই মেডিক্যাল কলেজে দুর্ঘটনায় বেশ কয়েকজন নবজাতকের মৃত্যুর খবর অত্যন্ত হৃদয়বিদারক।
“সৃষ্টিকর্তা শোকসন্তপ্ত পিতা-মাতা এবং পরিবারকে এই নিঠুর আঘাত সহ্য করার শক্তি দিন। আহত শিশুদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।”
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে ‘হৃদয়বিদারক’ বলে বর্ণনা করেছেন মোদী।
তিনি বলেছেন, “যারা এই ঘটনায় তাদের নিষ্পাপ সন্তানদের হারিয়েছেন, তাদের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা। আমি সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি যেন তিনি তাদের এই অপূরণীয় ক্ষতি সহ্য করার শক্তি দেন।
“রাজ্য সরকারের তত্ত্বাবধানে স্থানীয় প্রশাসন ত্রাণ ও উদ্ধারের জন্য সম্ভাব্য সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।”
রাজ্যের বিরোধী রাজনীতিকরা হাসপাতাল প্রশাসনের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন। এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব।
এস/ভি নিউজ