আমাদের মুখ থেকে যখন শুনবেন, সেটাই হবে তারিখ: ইউনূস— সংবাদ পত্রিকার প্রথম পাতার খবর এটি। এটি মূলত ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকার।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস গত ২৭শে সেপ্টেম্বর শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ভাষণের পর এ সাক্ষাৎকার দেন। সেখানে তিনি তার সরকারের মেয়াদ, বিভিন্ন সংস্কার, আইন-শৃঙ্খলা, ১৯৭১-এর গণহত্যা, পাবর্ত্য চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন।
তার নিউ ইয়র্ক সফরের ওই সময়টাতে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছিলেন যে আগামী ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে। সেই প্রসঙ্গে ধরে মুহাম্মদ ইউনূসকেও জিজ্ঞেস করা হয় যে তার সরকারের মেয়াদ আগামী ১৮ মাস পর্যন্ত কি না?
উত্তরে তিনি বলেছিলেন, “আমাদের মুখ থেকে যখন শুনবেন, সেটাই হবে তারিখ।” আমাদের বলতে তিনি সরকারকে বুঝিয়েছেন।
ওই সাক্ষাৎকারে নির্বাচন বা সরকারের মেয়াদ নিয়ে যে চিন্তাভাবনা উঠে এসেছে, সেগুলোও আজ দেশের প্রায় সকল পত্রিকার প্রথম পাতায় এসেছে।
সেপ্টেম্বরে প্রবাসীরা পাঠালেন ৫০ বছরের তৃতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স— এটি বণিক বার্তা পত্রিকার প্রধান শিরোনাম। এতে বলা হয়েছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে বড় ধরনের উল্লম্ফন হয়েছে।
প্রবাসী বাংলাদেশীরা সেপ্টেম্বরে পাঠিয়েছেন মোট ২৪০ কোটি বা দুই দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স। বাংলাদেশী মুদ্রায় যার পরিমাণ ২৮ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা। দেশের ইতিহাসে কোনো একক মাসে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে গতকাল রেমিট্যান্স প্রবাহের এ তথ্য জানানো হয়।
সাধারণত ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার মতো উৎসবকে ঘিরে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহে উচ্চ প্রবৃদ্ধি দেখা যায়। কিন্তু এবারই প্রথম বড় কোনও উৎসব ছাড়া এত বেশি পরিমাণ অর্থ পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, দেশে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে ২০২০ সালের জুলাইয়ে।
খাগড়াছড়িতে শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা, বাঙালি-পাহাড়ি সংঘর্ষ— এটি দৈনিক ইত্তেফাকের প্রধান শিরোনাম। এখানে বলা হয়েছে যে গতকাল মঙ্গলবার এই সংঘর্ষের জেরে সেখানে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।
নিহতের নাম আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানা। তিনি খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষকতা করতেন।
ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল বাতেন মৃধা গণমাধ্যমকে জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই শিক্ষক সোহেল রানাকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিল পাহাড়ি ছাত্রছাত্রীরা।
ওসির বরাতে খবরে বলা হচ্ছে, বেশ কয়েক বছর আগে সোহেল রানার বিরুদ্ধে এক পাহাড়ি ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা হয়েছিল। ওই ছাত্রী আদালতে এসে ‘পাহাড়ি একটি সংগঠনের চাপে মামলা করেছে’ মর্মে সাক্ষ্য দিলে সোহেল রানা খালাস পান এবং চাকরিতে যোগদান করেন।
সোহেল রানা চাকরিতে যোগদানের পর থেকে পাহাড়ি ছাত্ররা তার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির নানা অভিযোগ এনে প্রত্যাহার দাবি করে আসছিল।
এই খবরটি আজ দেশের প্রায় সকল পত্রিকার প্রথম পাতায় এসেছে।
লুটপাটের সহযোগী রউফ—যুগান্তর পত্রিকার প্রধান শিরোনামে বলা হয়েছে, প্রচলিত নীতিমালা শিথিল করে বাংলাদেশ ব্যাংকের পদত্যাগ করা গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোয় লুটপাটের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছিলেন।
নীতিমালাগুলো এমনভাবে শিথিল করা হয়েছিল যাতে লুটপাটকারীরা বিশেষ সুযোগ পান। লুটপাটের কারণে দুর্বল হওয়া ব্যাংকগুলোয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা ছাপিয়ে বেপরোয়াভাবে ঋণ দেওয়া হয়েছে।
ডলার না পেয়েও জোগান দেওয়া হয়েছে ছাপানো টাকার। লাগামহীনভাবে টাকা ছাপিয়ে সরকারকে ঋণ দেওয়ায় বেড়েছে মূল্যস্ফীতি। নিজে উদ্যোগী হয়ে একটি ব্যাংককে দখলদারের হাতে তুলে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
এছাড়া, সুদের হার ও ডলারের দাম নির্ধারণে ঘনঘন নীতির বদল করে অর্থনীতিকে অস্থিতিশীল করে তুলেছিলেন।
টাকা ছাপাতেই কত টাকা— দেশ রূপান্তর পত্রিকার প্রধান শিরোনাম এটি। এখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের টাঁকশালে মুদ্রা ছাপা হচ্ছে যেই যন্ত্রে তার বয়স ৪০ বছরেরও বেশি।
এত পুরনো যন্ত্র দিয়ে ছাপানোয় মুদ্রার মান একদিকে যেমন খারাপ হচ্ছে, অন্যদিকে কমছে স্থায়িত্ব। আবার পুরনো যন্ত্র বারবার মেরামতের পেছনেও অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে।
এক কথায় বাংলাদেশে টাকা ছাপানোর খরচ অন্যান্য দেশের চেয়ে বেশি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশের টাঁকশালের মেশিনগুলো সুইজারল্যান্ড ও জার্মানির তৈরি।
আশির দশকের প্রথমদিকে এসব মেশিন স্থাপন করা হয়। এখন আর এসব মেশিন তৈরি করা হয় না। অনেক পুরনো মেশিন হওয়ায় এর পার্টস (যন্ত্রাংশ) পাওয়া যায় না। ফলে কোনও যন্ত্রাংশ সংযোজনের প্রয়োজন হলে তা অর্ডার দিয়ে তৈরি করতে হয়।
এ কারণে ১০০ টাকার পার্টস বানাতে গিয়ে হাজার টাকা খরচ হয়।
গচ্ছিত ৭,৩৯৮ ভরি সোনা বেচে দেন আ.লীগ নেতা— প্রথম আলো পত্রিকার প্রধান শিরোনাম এটি। এখানে বলা হয়েছে, সমবায় ব্যাংকে সোনা জমা বা বন্ধক রেখে ঋণ নিয়েছিলেন সাধারণ গ্রাহকেরা। গ্রাহকদের সেই সম্পদ ভুয়া মালিক সাজিয়ে বিক্রি করে দিয়েছেন ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ।
নথিপত্র বলছে, সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান থাকার সময় ২০২০ সালে মহিউদ্দিন আহমেদ মোট সাত হাজার ৩৯৮ ভরি সোনা বিক্রি করে দেন, যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ব্যাংকটির দুই হাজার ৩১৬ জন গ্রাহক।
মহিউদ্দিন আহমেদ একসময় যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এখন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের (দক্ষিণ) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
সোনা বিক্রি করে দেওয়ার ঘটনা তদন্ত শুরু করেছিলো পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, যাদের অধীনে সমবায় ব্যাংক পরিচালিত হয়।
সমবায় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সেই তদন্ত থামিয়ে দেন মহিউদ্দিন আহমেদ।
এনায়েতের পেটে ১১ হাজার কোটি— কালের কণ্ঠ পত্রিকার প্রধান শিরোনাম এটি। এখানে বলা হয়েছে, খন্দকার এনায়েত উল্লাহ চাঁদাবাজি করে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা তুলেছেন। এই টাকায় কর্ণফুলী টানেলের মতো আরেকটি টানেল বানানো যেত।
গত ১৬ বছরে তিনি চাঁদাবাজিতে ‘ক্যাশিয়ারের’ ভূমিকায় থাকলেও তাঁর হাত ধরেই ভাগ পেয়েছেন মন্ত্রী, আমলা, পুলিশ, মালিক-শ্রমিক নেতারাও। পরিবহন মালিক সমিতি ও সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের নথিপত্র থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
চাঁদাবাজির মাত্রা পর্যালোচনা করতে গিয়ে দেখা গেছে, শুধু চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক থেকে খন্দকার এনায়েত উল্লাহ একাই মাসে চাঁদা পেতেন ১০ লাখ টাকা। শুধু একটি মহাসড়কই নয়, সারা দেশে এ রকম চাঁদাবাজির ফাঁকফোঁকড় রেখেছিলেন তিনি।
বাজার গরম, তদারকি নরম— এটি সমকাল পত্রিকার প্রথম পাতার খবর। এখানে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর শুরুতে নিত্যপণ্য থেকে শুরু করে মাছ-মাংস সবকিছুর দাম তিন ভাগের এক ভাগে চলে এলেও এখন তা ফের বেড়ে গেছে।
ভোক্তা-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের দুর্বলতার সুযোগে ‘সিন্ডিকেট’ ফের চালু হয়েছে।
বাজার তদারকির সঙ্গে যুক্ত সরকারি অনেক সংস্থা মাঠে অকার্যকর। সংস্থাগুলো তাদের কাজের গতি না বাড়ালে বাজার পরিস্থিতি অনুকূলে আসার সম্ভাবনা কম।
যদিও সরকার-সংশ্লিষ্টদের দাবি, তাদের তদারকি অব্যাহত আছে।
বদলি-আতঙ্কে নেতৃত্ব দেওয়া পুলিশ সদস্যরা— এটি আজকের পত্রিকার প্রথম পাতার খবর।
এতে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে ১১ দফা দাবিতে কর্মবিরতিতে নেতৃত্ব দেওয়া অধস্তন পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ইতোমধ্যে দুজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা এবং কয়েকজনকে রাজধানীর বাইরে বদলি করা হয়েছে। কাউকে কাউকে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে পুলিশের অধস্তন সদস্যদের মধ্যে মামলার ভয় ও বদলি-আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তর বলেছে, নিয়মিত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই পুলিশের সব বিভাগে বদলি ও পদায়ন চলছে। ওই আন্দোলনের সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই। আর মামলা করা হয়েছে বাহিনীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উসকানি দেওয়ার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে।
Iran fires 180 missiles at Israel—এটি দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার প্রধান শিরোনাম। এখানে বলা হয়েছে, তেহরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীর নেতাদেরকে হত্যার প্রতিক্রিয়ায় গতকাল রাতে ইসরায়েলের দিকে অন্তত ১৮০ ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে ইরান।
তবে আইডিএফ বলেছে, এই হামলার ফলাফল ভোগ করতে হবে ইরানকে।
ইরান গতকাল যে হামলা চালিয়েছে, তা ইসরায়েলি নাগরিকদের মনে ভীতির সৃষ্টি করেছে। যদিও ইরানের ছোঁড়া বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্রই ইসরায়েলে পৌঁছানোর আগে ইসরায়েলি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিলো।
ইরানের এই হামলার খবরও আজ দেশের অনেকগুলো পত্রিকার প্রধান শিরোনাম।
এস/ভি নিউজ